Wednesday 05 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফিঙ্গারপ্রিন্টে জাতীয় পরিচয়পত্র চান মহিলা আনজুমান

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৩ | আপডেট: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৩৭

শুধু ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিমুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেওয়ার দাবি জানান তারা।

রাজশাহী: ছবি তুলে নয়, শুধু ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিমুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মহিলা আনজুমানের নেতারা। সংগঠনটির পক্ষ থেকে রাজশাহীতে সমাবেশও করা হয়।

মহিলা আনজুমানের রাজশাহী জেলা ও মহানগর মজলিসের ব্যানারে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিলও বের করেন নারীরা।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, সমাবেশে মহিলা আনজুমানের নেতারা বলেন, শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার। গত ১৬ বছর ধরে অসংখ্য পর্দানশীন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বঞ্চিত। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। পদনাশীন নারীরা এসব হেনস্তার অবসান চান। চেহারার বদলে তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবি তোলেন।

তারা বলেন, একজন নারী ছবি তুললে দুটি গুনাহ হয়। একটি ছবি তোলার গুনাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুনাহ। আবার ওই ছবিটি পরবর্তীতে যতজন বেগানা পুরুষ দেখবে বেপর্দা হওয়ার গুনাহ তত বাড়তেই থাকবে। এমনকি মৃত্যুর পরও ওই ছবির কারণে বেপর্দার গুনাহ জারি থাকবে। পর্দানশীন নারীরা সেই গুনাহ থেকে বাঁচতে চান।

তারা বলেন, রাষ্ট্রে মৌলিক অধিকার আটকে রেখে পর্দানশীন নারীদের গুনাহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তার ধর্মীয় বা দ্বীনি অধিকার লঙ্ঘন। আবার একজন পর্দানশীন নারী তার চেহারা কাউকে দেখাতে চান না, এটা তার গোপনীয়তার অধিকার। ফলে জোর করে চেহারা দেখাতে বাধ্য করা তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন। তারা এর অবসান চান।

বিজ্ঞাপন

পর্দানশীন নারীরা আরও বলেন, মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল। সময়ের ও অবস্থার সঙ্গে মানুষের চেহারার দৃশ্য পরিবর্তন হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। অথচ সেই মুখচ্ছবির অজুহাতেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে, শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বেপর্দা। এছাড়া ছবি ও চেহারা মিলিয়ে সনাক্তকরণ একটি দুর্নীতিবান্ধব পদ্ধতি, অপরদিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে সনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক পদ্ধতি। আধুনিক বিশ্ব চেহারা ও ছবি মিলিয়ে পরিচয় যাচাইয়ে সেকেলে পদ্ধতি বর্জন করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশেও তা চালু করতে হবে।

সমাবেশে পর্দানশীন নারীরা তিনটি দাবি পেশ করেন। সেগুলো হলো- বিগত ১৬ বছর যে সমস্ত সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা, পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার প্রদান করা; সকল ক্ষেত্রে পরিচয় সনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা এবং পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় কোনো পুরুষ নয়, নারী সহকারী বাধ্যতামূলকভাবে রাখার ব্যবস্থা করা।

সমাবেশ শেষে পর্দানশীন নারীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেন। কর্মসূচিতে কয়েকশো পর্দানশীন নারী উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/ইআ

ফিঙ্গারপ্রিন্টে জাতীয় পরিচয়পত্র মহিলা আনজুমান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর