ঢাকা: ভাষা আন্দোলোন ও জুলাই অভ্যুত্থানের আবেগ ও চেতনায় চলছে মাসব্যাপী ‘অমর একুশে বইমেলা’। কর্তৃপক্ষ, লেখক, বইপ্রেমী ও পাঠকদের মতে, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন বইমেলা।
এই মেলাকে বলা হচ্ছে, পলিথিনমুক্ত বা প্রোপাইলিন মুক্ত স্বচ্ছ বইমেলা। কারণ, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এবার পলিথিন ব্যাগে বই বিক্রি করা যাবে না। কোনো প্রকাশনা সংস্থা যদি পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখলাম। কেউই পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করছে না। এটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। এখন প্রকাশকরা যদি এভাবেই পলিথিন থেকে বের হয়ে এসে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে পারে তা হবে বইমেলার জন্য একটি শুভ উদ্যোগ।’
এদিকে দুপুর থেকেই বইপ্রেমীদের পদচারণায় জমে উঠে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বইমেলা প্রাঙ্গণ। বিশেষ করে অফিস শেষে একটু একটু করে আসতে থাকে দর্শনার্থীরা। জমে উঠে বেচাবিক্রি।
সরেজমিনে দেখা গেলো, কোনো প্রকাশনীতেই পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে না। বেশিরভাগই টিস্যু ব্যাগ, বা নকশা করা কাগজের ব্যাগ ব্যবহৃত হচ্ছে।

কোনো প্রকাশনীতেই পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার হচ্ছে না। ছবি: সারাবাংলা
জ্ঞানকোষ প্রকাশনী থেকে বই কিনছিলেন শান্ত তৈমুর। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কিছু বই কিনলাম। সত্যিই আমি কোথাও পলিথিন ব্যাগ পাইনি। আমার হাতে এখনো বইয়ের ব্যাগ আছে। এখানে সবই পলিথিনমুক্ত ব্যাগ ‘
পেশায় শিক্ষক তাজুল ইসলাম। হাতে হরেক রংয়ের ব্যাগে বেশকিছু বই। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এবারের বইমেলায় বই কিনে আরামে বহন করতে পারছি। কারণ পলিথিন ব্যাগ কচমচ করে। হাতে ঝুলিয়ে রাখতে গেলে চামড়ায় প্রেসার পরে। কিন্তু এবার অনেক সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের ব্যাগ পাচ্ছি। বাংলা একাডেমির এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। শুধু এবার নয়, প্রতিবারই বইমেলা থাকুক পলিথিনমুক্ত।’
এ বিষয়ে আদর্শ প্রকাশনীর প্রকাশক মাহবুব রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সহজলভ্য ও পচনশীল ব্যাগেই বই দিচ্ছি। কিন্তু সেই ব্যাগের জন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে ২৫ থেখে ৩০ টাকা বাড়তি রাখতে হচ্ছে। এটি অনেক ক্রেতার পছন্দ হচ্ছে না। আবার আমাদেরও এটা ভালো লাগে না নিতে। সেক্ষেত্রে পলিথিনের বিকল্প সহজলভ্য ব্যাগের যোগান যাতে কর্তৃপক্ষ দেয়, সেই অনুরোধ থাকবে।’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মধ্যে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে চুক্তি করেছিল বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্র। তারই ধারাবাহিকতায় এই উদ্যোগ নিয়েছে বইমেলা কর্তৃপক্ষ। প্রাণের মেলাকে প্রাণবন্ত করে তুলতে কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা।