Wednesday 12 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচল
ওভারস্পিডিং করলেই মামলা, ৩ মামলায় চলাচল নিষিদ্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৩৫ | আপডেট: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪১

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচলের দৃশ্য – ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: এখন থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওভার স্পিডিং তথা ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিসীমা অতিক্রম করলে আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ভিডিও দেখে মামলা দেওয়া হবে। আর একই গাড়ি তিন বারের বেশি গতিসীমা লঙ্ঘন করলে ভবিষ্যতে ওই গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কুড়িলে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল বিল্ডিংয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (অপারেশন ও মেইনটেনেন্স) কোম্পানি লিমিটেড এর যানচলাচল, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) হাসিব হাসান খান এসব কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সেন্ট্রাল কন্ট্রোল বিল্ডিংয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে। ছবি: সারাবাংলা

তিনি বলেন, ‘১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিসীমা অতিক্রম করলেই মামলা দেবে পুলিশ। মামলা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে হবে। যেহেতু ভিডিও ক্যামেরাগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টারে, এখানে তো সার্বক্ষণিক পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকা সম্ভব নয়, সেজন্য একটা ক্যাবলের মাধ্যমে পুলিশের দফতরে সংযোগ দেয়া হবে। যাতে তারা সেখানে বসেই তদারকি করতে এবং নিয়ম অমান্যকারী গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।’

হাসিব হাসান খান বলেন, গাড়ি ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের সময় যেকোন অপরাধের কারণে কোন গাড়ির বিরুদ্ধে যদি ৩ বার মামলা হয়, তবে ওই গাড়িকে আর কখনও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। অভিযুক্ত গাড়িগুলোর তালিকা পুলিশ ও এক্সপ্রেসওয়ের প্রতিটি টোল প্লাজায় সরবরাহ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে আমরা প্রধানত পাঁচটি সমস্যা মোকাবিলা করেছি। এগুলো হল, ওভারহিট গাড়ি, চাকা পাংচার, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া, বিমানবন্দরের যাত্রী সেবা, দুর্ঘটনা ঘটা। এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু জানুয়ারি মাসে এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করা অবস্থায় ৯০টি গাড়ির ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দেয়। টায়ার ব্লাস্টের ঘটনা ঘটে ৫১টি, জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ২০টি ঘটনা ঘটেছে। এর বাইরে এ পর্যন্ত বড় আকারের ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

হাসিব হাসান খান বলেন, আমাদের বেশকিছু নীতিমালা আছে। ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচলে নিরাপদ ও দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে নীতিমালাগুলো ব্যবহারকারীদের মানতে হবে।

নীতিমালাগুলো হচ্ছে— অতিরিক্ত গতি দুর্ঘটনার কারন, তাই এক্সপ্রেসওয়েতে যান চলাচলের গতি নির্ধারিত গতিসীমার মধ্যে থাকতে হবে; ভিডিও নজরদারির মাধ্যমে গতিসীমা রেকর্ড করা হবে ও নির্ধারিত গতিসীমা অতিক্রম করলে স্পিড ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও মামলা করা হবে। বেপরোয়া গতিতে যান চলাচল করলে এবং একই গাড়ি তিন বারের বেশি গতিসীমা লঙ্ঘন শনাক্ত হলে ভবিষ্যতে ঐ গাড়ি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। সুশৃঙ্খল ট্র্যাফিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সবসময় নির্ধারিত লেনের মধ্যে গাড়ি চলাচল করতে হবে, সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া লেন পরিবর্তন করা হলে ঐ গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি থামানো বা পার্কিং কঠোরভাবে নিষেধ।

এছাড়া যান চলাচলে গাড়ী বা মেশিনারীজ ত্রুটি বা অন্য যে কোনো সমস্যা অনুভব করলে জরুরি লেনে যেতে হবে এবং দ্রুত এক্সপ্রেসওয়ের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে, টোল প্লাজা, টোল সংগ্রহের বুথ, লেন এবং এর এক্সপ্রেসওয়ের অবকাঠামোগত যে কোনো ক্ষতির জন্য যানবাহনের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে, উন্মুক্ত যান, অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গত করে এমন যানবাহন, যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে এমন খোলা যানবাহন, নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি করে এমন অনুপযুক্তভাবে সুরক্ষিত পণ্যবাহী যান চলাচল কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষনা করবে, এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামানো সম্পূর্ণ নিষেধ। কোনো যাত্রীবাহী বাস অথবা অন্য কোনো যানবাহন যদি এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামান তাহলে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটা যানবাহন একটির সাথে আরেকটির নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে, এক্সপ্রেসওয়েতে ২৪ ঘন্টা টহল অফিসার এবং নিরাপত্তা কর্মী আপনাদের যে কোনো সহযোগিতায় নিয়োজিত আছে তাদের সাথে সর্বদা সহযোগিতা করুন; যানবাহন থেকে যে কোনো জিনিসপত্র (যেমন টোল টিকেট, টিস্যু পেপার) এক্সপ্রেসওয়েতে ছুড়ে ফেলা নিষেধ এবং মানষিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ এবং গাড়ী ড্রাইভিং করার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার সম্পূর্ন নিষেধ।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, অ্যালকোহল, ড্রাগ বা অন্য কোন নেশাদ্রব্য বা ক্ষতিকর কিছু গ্রহণ করে কঠোরভাবে নিষেধ; টোল প্লাজার লেনে প্রবেশের সময় পণ্যবাহী ট্রাক অথবা পিকআপ ও পন্যগুলোকে ডেকে রাখতে হবে; নির্মাণ কাজে নিয়োজিত কোন ধরনের ভারী ও ধীরগতির যানবাহন টোল এবং এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশের অনুমতি নেই, দুই বা তিন চাকার গাড়িতে প্রবেশের অনুমতি নেই, একটি যানবাহন অন্য একটি যানবাহনকে দড়ি বা অনুপযুক্ত উপায়ে টেনে নিয়ে টোল লেনে প্রবেশের অনুমতি নেই; কোন খোলা ট্রাক/পিকআপ মানুষ থাকলে তা টোল লেনে প্রবেশ করতে পারবে না,তুললে না প্রবেশের সময় যানবাহনের গতি ২০ কিলোমিটারের নিচে থাকতে হবে। অন্যথায় বড় যানবাহনের কারণে দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ও ক্ষতি পূরণ মালিককে বহন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু দুর্ঘটনা ও উদ্ধারের ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়।

সারাবাংলা/জেআর/এমপি

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর