সংস্কারের নামে কি আ.লীগকে পুনর্বাসন করা হবে— প্রশ্ন মান্নার
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৪৭ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:১০
ঢাকা: নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, কী সংস্কার করা হচ্ছে তা আমরা কিছু বুঝতে পারছি না। ১৫টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কিন্তু সেই রিপোর্টের সঙ্গে একটি রাজনৈতিক দলও একমত হতে পারেনি। তাহলে সংস্কারের নামে কি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হবে?
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘সংস্কার থেকে নির্বাচন কতদূর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির ভোটকে সমর্থন করি না। পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ হয়তো স্বাভাবিকভাবে ২৫ শতাংশ ভোট পেয়ে যেতে পারে। তাহলে দেখা যাবে, ৭৫টি আসন তারা পাবে, এটা আমি চাই না। যে আইনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ এত মানুষকে হত্যা করেছে, পুরো দেশকে শেষ করে দিয়েছে, তাদের পুনর্বাসন হবে এমন আইন চালু করা যাবে না।’
তিনি বলেনে, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য ও জনগণের সম্মতিতে সংস্কার করা হবে। তারা যদি সম্মতি না দেয় তাহলে সংস্কার হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো ও অংশীজনরা এখন পর্যন্ত কয়টি সংস্কারের ব্যাপারে একমত হয়েছে? দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনাও হয়নি।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘পর পর দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠেছে- পর পর দুইবারের বেশি হতে পারবেন না, কিন্তু একবার অবসর দিয়ে ফের দাঁড়াতে পারবেন। এখানে আইনি ফাঁক-ফোকর রয়েছে। বাংলাদেশকে চার প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কতজন একমত হয়েছেন? দেশের মানুষ সংবিধান বুঝতে পারে, এমনভাবে সংবিধান রচনা করতে হবে।’
মান্না বলেন, ‘যদি দেশটা গঠন না করতে পারি তাহলে এত জীবন দিয়ে লাভ কি? জীবনদান তো বৃথা হয়ে গেল। গত ১৫ বছর শেখ হাসিনা দেশে যে গজব তৈরি করেছিলেন, এ থেকে বের হতে না পারলে আবারও গজবের দেশ থাকবে। এখান থেকে দেশকে পরিবর্তন করার জন্য সবাই সংস্কারের জন্য একমত হয়েছি। যদি আমরা ভালো থাকতে চাই তাহলে এই পরিবর্তন দুই দিন হলেও দরকার। এজন্য অবশ্যই গুণগত সংস্কার আমাদের লাগবে।’
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী সংস্কার প্রস্তাব প্রসঙ্গ টেনে নাগরিক ঐক্যর সভাপতি বলেন, ‘আইন সংস্কারের জন্য স্বল্প মেয়াদী কোনো প্রস্তাব নেই। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রস্তাব লিখিতভাবে দিয়েছে। আমি মনে করি, ১৫ দিনের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্যে যাওয়া সম্ভব।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো সরকার, ভালো শাসক চাই। এ জন্য দরকার ভালো রাজনৈতিক দল। ভোট দেওয়ার আগে জনগণ দেখেশুনে ভোট দেবে। যদি দুই নম্বর মনে হয়, তাহলে তাদের ভোট দেবে না। কিন্তু সবার আগে রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রয়োজন।’
বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাহেলের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বিজয় কান্তি সরকার প্রমুখ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম