জলাবদ্ধতা নিরসন
খালের মুখ ‘বাধাহীন’ করার তোড়জোড় বন্দরের
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:০৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত আটটি খালের প্রবেশমুখ খনন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে এসব খালের মুখে ৫৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে বলে বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া মেগাপ্রকল্পসহ সার্বিক কার্যক্রম মনিটরিং শুরু করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চারজন উপদেষ্টা। গত ১৯ জানুয়ারি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক এবং সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান চট্টগ্রামে এসে বন্দর, সিটি করপোরেশন, সিডিএ, ওয়াসাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরবর্তীতে দায়িত্বপ্রাপ্ত আরেক উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানও চট্টগ্রামে এসে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসেছিলেন।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বন্দরের পক্ষ থেকে কর্ণফুলী নদীর মূল চ্যানেলে ড্রেজিং এবং নদীর সঙ্গে সংযুক্ত খালগুলোর প্রবেশমুখের বর্জ্য অপসারণের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। মাননীয় উপদেষ্টাবৃন্দের মতবিনিময় সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে এ কার্যক্রম আরও জোরদার করেছি। শহরে বিশেষ করে রাজাখালী ও চাক্তাই খালসহ নদীর সঙ্গে যুক্ত খালগুলো, যেগুলো আমাদের বন্দরের জলসীমার মধ্যে পড়েছে, সেগুলোর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার কাজ চলছে।’
বন্দর কর্তৃপক্ষের ড্রেজিংয়ের আওতায় থাকা আটটি খাল হচ্ছে- রাজাখালী খাল, চাক্তাই খাল, ফিশারিঘাট, জোবায়ের খাল, লইট্টা খাল, বিএফটি খাল, অভয়মিত্র খাল এবং পিকে সেন খাল।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ২০১৭ সালে ‘ক্যাপিটাল ড্রেজিং’ নামে ২৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করে। ২০২২ সাল থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। নৌবাহিনী এ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কর্ণফুলী নদীর নাব্যতা ফেরানোর পাশাপাশি এবং নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে আটটি খালের মুখ খনন করা হচ্ছে এ প্রকল্পের আওতায়।
সচিব জানান, দুটি কাটার সাকশান ড্রেজার, একটি এম্পিবিয়াস ড্রেজার এবং একটি বর্জ্য অপসারণকারী জাহাজ বে ক্লিনার-১ প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত আছে। প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ছয় থেকে সাত হাজার ঘনমিটার মাটি তোলা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রকল্পের আওতায় ৫৫ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
‘আমরা আশা করছি বর্ষার আগেই খালগুলোর প্রবেশমুখে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হবে। আমরা আমাদের এ কাজ নিয়মিত চালু রাখবো। তবে সমস্যাটা হচ্ছে খালের ভেতরে, সেখানে তো কাজ করার এখতিয়ার আমাদের নেই। খালের ভেতরে যদি প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্যের জন্য পানি আটকে যায়, সেক্ষেত্রে প্রবেশমুখ ড্রেজিং করলেও পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক হবে না। এজন্য নগরবাসীকে সচেতন করতে হবে, যাতে কেউ খাল-নালায়, ড্রেনে সরাসরি বর্জ্য নিক্ষেপ না করেন,’ – বলেন সচিব ওমর ফারুক।
চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন একটি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। চার প্রকল্পে মোট ব্যয় প্রায় ১৪ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৭ সালে শুরু হওয়া ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ৮ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সিডিএ।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর
কর্ণফুলী নদী খালের মুখ ‘বাধাহীন’ চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম নগরী জলাবদ্ধতা জলাবদ্ধতা নিরসন তোড়জোড় বন্দরের নগরীর জলাবদ্ধতা