টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ, ১২ দেশে তদন্ত
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩২ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৪
যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগের তদন্ত বহাল রেখেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক জানিয়েছে, এই তদন্ত বর্তমানে অন্তত ১২টি দেশে পরিচালিত হচ্ছে।
গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ এবং এর কিছু অংশ বিদেশে সম্পত্তি কেনার জন্য ব্যবহারের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুদক।
তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের এক মুখপাত্র দ্য সানডে টাইমসকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক প্রতিবেদনে দেখেছি যে কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, অন্যান্য দেশেও অর্থ পাচার করা হয়েছে। আমাদের দল পারস্পরিক আইনি সহায়তা চেয়ে বিভিন্ন দেশে তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহের জন্য অনুরোধ পাঠিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্তের অংশ হিসেবে ১০ থেকে ১২টি দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে টিউলিপের বিষয়ে কতোগুলো দেশের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দল বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে কাজ করছে। যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য দেশের সহায়তার আশ্বাস পেয়েছি।’
এদিকে, জানুয়ারির শেষ দিকে ঢাকায় কয়েক দিন অবস্থান করে দুদকের তদন্তে সহায়তা করেন ব্রিটেনের ‘ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি’র (এনসিএ) কর্মকর্তারা।
এখন পর্যন্ত টিউলিপের নাম এসেছে দুদকের তিনটি তদন্তে। এর মধ্যে একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে লাভবান হওয়া, তার খালা শেখ হাসিনা ও পরিবারের সদস্যদের জন্য জমি বরাদ্দ দিতে প্রভাবিত করা এবং অর্থপাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
টিউলিপ এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করলেও সূত্রগুলো বলছে, এই অভিযোগ তার খালা ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সাজানো। টিউলিপের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে কারো যোগাযোগ হয়নি এবং তিনি এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন।’
জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর পর টিউলিপকে মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়।
প্রথমে টিউলিপ দাবি করেছিলেন, লন্ডনের কিংস ক্রসে অবস্থিত সাড়ে ছয় লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি ফ্ল্যাট তার বাবা-মা তাকে উপহার দিয়েছেন। তবে পরে জানা যায়, ফ্ল্যাটটি কিনেছেন আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ডেভেলপার আবদুল মোতালিফ।
এরপরে ডিসেম্বরে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উল্লেখ করে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে। দুদক ১২০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও প্রয়োজনে সময় বাড়ানো হতে পারে।
দুদকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ হলে বাংলাদেশ সরকার টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে প্রত্যর্পণের জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ