জেল প্রিমিয়ার লিগ উদ্বোধন করলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৩ | আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৬
ঢাকা: সারাদেশে ‘মানবিক ডিসি’ পরিচিত নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার নির্দেশনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে কারাবন্দিদের অংশগ্রহণে ‘নারায়ণগঞ্জ জেল প্রিমিয়ার লিগ’ শুরু হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নারায়ণগঞ্জ ‘জেল প্রিমিয়ার লিগ’ এর শুভ উদ্বোধন হয় করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তিনি বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধন করেন।
চার দেয়ালের বন্দিজীবন থেকে ক্ষণিকের জন্য হলেও যেন মুক্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের ১ হাজার ১৯৭ পুরুষ এবং ৪৭ মহিলা বন্দি। বন্দিদের মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত ২৫২ জন এবং বিচারাধীন বন্দি ৯৯২ জন বলে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
টি-১০ পদ্ধতির এই টুর্নামেন্টে ভাইকিংস, সাইক্লোন, অলস্টার, থান্ডার বোল্টস ও ভিক্টোরিয়ান্স নামে মোট ৫টি দল অংশগ্রহণ করবে। রাউন্ড রবিন লীগ পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ পয়েন্ট অর্জনকারী ২টি দল ফাইনালে একে অপরের মোকাবিলা করবে।
নারায়ণগঞ্জ জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ জানিয়েছেন, আজকে জেলা প্রশাসক স্যারের নির্ধারিত জেলখানা পরিদর্শন ছিল। কিন্তু উনার বিশেষ আগ্রহেই আমরা এই ব্যাতিক্রমী আয়োজন করেছি।
এ সময়ে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, নারায়ণগঞ্জসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জেল সুপার মোহাম্মদ ফোরকান ওয়াহিদ, জেলার মো. মামুনুর রশিদসহ অন্যান্য কারা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম তার বক্ততায় অপরাধ প্রবণতা থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি কারাবন্দিদের নির্মল ও পরিচ্ছন্ন বিনোদনের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে খেলায় অংশগ্রহণকারী বন্দিসহ সকল বন্দিদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘কারাগার এখন আর শুধুমাত্র বন্দিশালা নয়, কারাগার হচ্ছে সংশোধনাগার।’
তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের ভাবতে হবে আপনারা হয়তো রাগের বশবর্তি হয়ে, ইমোশনাল হয়ে কিংবা না বুঝে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু এর প্রভাব আপনার ওপর যতটা না পড়ে, তারচেয়ে বেশি পড়ে আপনাদের পরিবার এবং সন্তানদের ওপর।’
তিনি বন্দিদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এই পৃথিবীতে যারাই বড় হয়েছেন, তারা পরিশ্রম করে হয়েছেন। তাই আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করি, আপনারা ভালোপথে আসুন, সুস্থ জীবনে আসুন। এই জন্য আমরা এই সুন্দর খেলার আয়োজন করেছি। আমরা আপনাদের দেখাতে চেয়েছি জীবনটা অনেক সুন্দর। আপনারা যখন জেল থেকে বের হবেন, তখন এই সুন্দর জীবনের দিকে তাকাবেন।’
তিনি মাদকসহ অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত না হওয়ার জন্য বন্দিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আনন্দ-বিনোদনের পাশাপাশি কারাগার কর্তৃক প্রদত্ত কর্মমুখি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হয়ে বন্দিদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরে যেতে হবে।’
তিনি এ আয়োজনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
সারাবাংলা/ইউজে/এইচআই