Tuesday 11 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গ্রীষ্মে আদানির কাছে পুরো বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় সরকার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৮ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০১

ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত আদানি পাওয়ারের উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। এর পুরোটা বাংলাদেশে সরবরাহ করার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছেনা। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে উৎপাদন সক্ষমতার অর্ধেক বিদ্যুৎ অর্থাৎ ৮০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুম সামনে রেখে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে আদানি গ্রুপের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বিজ্ঞাপন

সেখানে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, শীতে বিদ্যুতের চাহিদা কম ছিল। এ ছাড়া বিদ্যুতের বকেয়া বিল পরিশোধ নিয়ে বিরোধের কারণে আদানির কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছিল। সরবরাহ এখন আগের পর্যায়ে নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন সক্ষমতা ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট। দুই ইউনিট ৮০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের সক্ষমতা রাখে। গত বছরের নভেম্বর থেকে একটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ বন্ধ। এখন দুটি ইউনিট থেকেই উৎপাদিত সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ চেয়েছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়ে ২০১৭ সালে আদানির সঙ্গে ক্রয় চুক্তি করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। ২০০ কোটি (২ বিলিয়ন) ডলারে নির্মিত ওই কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ২৫ বছর কিনবে বাংলাদেশ। আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ২০২৩ সালের এপ্রিলে। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয় ওই বছরের বছরের জুনে।

আন্তজার্তিক গণমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে ডলার সংকট। সে কারণে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে না পারায় গত ৩১ অক্টোবর একটি ইউনিট বন্ধ করে দেয় আদানি। ফলে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামে। এরপর শীতে চাহিদা কম থাকায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও অর্ধেক (একটি ইউনিট থেকে) বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যেতে অনুরোধ করা হয়।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সুত্র বলছে, তারা আদানির কোম্পানিকে মাসে ৮৫ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার করে পরিশোধ করছে। এখন চাহিদা বাড়ায় দ্বিতীয় ইউনিট থেকেও পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করতে বলেছে।বিপিডিবির কাছে তাদের প্রায় ৯০০ মিলিয়ন বা ৯০ কোটি ডলার বাকি আছে। ওই সময় বিপিডিবি চেয়ারম্যান বলেছিলেন, এই বকেয়ার পরিমাণ ৬৫ কোটি ডলার। যদিও বিদ্যুতের দাম নির্ধারণে আদানির সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধ রয়েছে। বলা হয় অন্যান্য ভারতীয় বিদ্যুতের চেয়ে প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি অর্থে বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এদিকে ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের আদালত। ওই কমিটির প্রতিবেদন চলতি ফেব্রুয়ারি মাসে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এ ছাড়াও গত বছরের আগস্টে ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়ে যান হাসিনা। এরপর গত সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার সময়ে সই হওয়া প্রধান জ্বালানি চুক্তিগুলো পরীক্ষা করার জন্য বিশেষজ্ঞদের প্যানেল নিয়োগ করে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই চুক্তিতে অনিয়মের কথাও বলছে বর্তমান অন্তর্বতী সরকার।

সারাবাংলা/জেআর/ইআ

আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর