ওসিসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩৯ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৩৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চাঁদাবাজির অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও পুলিশের তিন কর্মকর্তাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের তৃতীয় মহানগর হাকিম আলমগীর হোসেনের আদালতে মামলার আবেদন করেন মামুন আলী নামে এক ব্যক্তি।
তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। মামুন আলী কিং আলী নামেই পরিচিত। চাঁদা না পেয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভাঙচুর, লুটপাটের অভিযোগ ওঠার পর ২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ১৯ অক্টোবর তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
মামুন আলীর করা মামলায় পাহাড়তলী থানার ওসি বাবুল আজাদকে প্রথম আসামি করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তরা হলেন- পাহাড়তলী থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) মানিক ঘোষ, বন্দর থানার এস আই আসাদুল হক, কিশোর মজুমদার, এস এস ট্রেডিং এর সত্ত্বাধিকারী সাইফুল ইসলাম সুমন, ব্যবস্থাপক আরিফ মঈনুদ্দিন, উপ ব্যবস্থাপক মো. আমান ও সুপার ভাইজার দিদার হোসেন সজিব।
মামলার এজাহারে মামুন আলী উল্লেখ করেন, গত বছরের ১০ অক্টোবর বন্দর এলাকার জিএইচ এন্টারপ্রাইজ থেকে ২০ হাজার টন পাথর কেনেন মামুন আলী। এর বিপরীতে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। এরপর পাথরগুলো পাহাড়তলীর টোল রোডের কিং আলী গ্রুপের ডিপোতে এনে রাখেন। একই বছরের ১৭ অক্টোবর অভিযুক্তরা ডিপোর কার্যক্রমে বাধা দেন। প্রতিবাদ করলে পাহাড়তলী থানার এসআই মানিক ঘোষ ওসির সঙ্গে দেখা করতে বলেন। সন্ধ্যায় বাদী ওসির কাছে গেলে পাথর কেনার রশিদ ও তার সকল জায়গার মূল্য ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ১ শতাংশ অর্থাৎ এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান।
ওইদিন রাত ১০টার দিকে এসআই মানিক ঘোষ তাকে দ্রুত থানায় গিয়ে চাঁদার টাকা দিতে বলেন। একইসাথে বাদীর করা আগের একটি মামলা থেকে হালিশহর থানার সাবেক ওসি প্রণব চৌধুরীর নাম বাদ দিতে বলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় তাকে থানায় আটক রেখে তিন পুলিশ সদস্য মারধর করেন। পরদিন তাকে একটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
এরপর ২৪ অক্টোবর ৩০টি ট্রাক নিয়ে গিয়ে ডিপোর কেয়ারটেকারকে মারধর করেন অভিযুক্তরা। সে সঙ্গে ডিপোতে রাখা ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার পাথর, মাটি, ১০ লাখ টাকার স্কেলসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নেন অভিযুক্তরা। ৪৯ দিন হাজতে থাকার পর মামুন আলী জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বের হন এবং ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন।
বাদীর আইনজীবী আশরাফুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, বাবুল আজাদের নেতৃত্বে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও অন্যন্যরা মামুন আলীর কাছ থেকে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা মামুন আলীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করেন। এরপর তার ডিপোর সব মালামাল লুট করে নিয়ে যান। আদালত মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সারাবাংলা/আইসি/এইচআই