Tuesday 11 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, বিএনপির ৫ কর্মী আহত

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৫৯ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:০২

দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়

যশোর: মাইকে ঘোষণা দিয়ে যশোর সদরের বড় হৈবতপুরে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপির ৫ জন কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন— হৈবতপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি রাজু (৪৪), ৪নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সম্পাদক শামীম (৩৬), বিএনপি কর্মী জিয়া (৩৫) এবং ৪নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের কোষাধ্যক্ষ পাপ্পু।

এ ছাড়া দুপুর দেড়টার দিকে, এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের শফি নামের একজন নিজেকে আহত দাবি করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে হৈবতপুরের বাসিন্দাদের তোপের মুখে পড়েন। হাসপাতাল চত্তরেই শফিকে মারপিট করে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনায় রেফার করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের আব্দুলপুর গ্রামের বাসিন্দাদের চাষাবাদের জমি রয়েছে হৈবতপুর ইউনিয়নের বড় হৈবতপুর গ্রামের মাঠে। তাদের মধ্যে রয়েছে চুড়ামনকাটি ইউপি মেম্বর ও আওয়ামী লীগ নেতা আনিসুর রহমানের জমিও।

অভিযোগ রয়েছে, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আনিছুর নিজের জমিতে সেচের পানি দিতেন হৈবতপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জমির আইল কেটে । এর প্রতিবাদ করার কারও সাহস ছিল না। ঠিক একইভাবে মঙ্গলবার অন্যের পানি নিজের জমিতে দেওয়ার জন্য আইল কেটে দেন আনিছসহ তার লোকজন। গ্রামবাসী বিষয়টির প্রতিবাদ করেন। এক পর্যায়ে আনিছুর নিজ এলাকার মসজিদের দুইটি মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন ডাক দেন। কিছু সময়ের মধ্যে ৫০-৬০জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চলে আসে। অন্যদিকে বড় হৈবতপুর গ্রামবাসীও সেখানে চলে আসেন।

সে সময় দুই গ্রামের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন যুবদল নেতা রাজু। দুই পক্ষের মধ্যে মিমাংসাও হয়ে যায়। পরে হৈবতপুরের লোকজন ফিরে যাচ্ছিলেন বাড়ির দিকে। এমন সময় আনিছের নেতৃত্বে শফিক, তৌহিদ এবং রমজানসহ স্থানীয় সন্ত্রাসীরা হৈবতপুরের লোকজনের ওপর আতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় গুরুতর জখম হন ওই চারজন। হৈবতপুরের আরও লোকজন ছুটে আসলে আনিছ মেম্বারের লোকজন চলে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আনিছের সহকারী শফিকে নিয়ে তার পরিবার যশোর জেনারেল হাসপাতালে আসেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী তাকে হাসপাতাল চত্তরেই মারপিট করে।

বিজ্ঞাপন

হৈবতপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মাজেদুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আনিছ মেম্বার যা ইচ্ছে তা করেছেন। গড়ে তুলেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী। তার নেতৃত্বে ডাকাতি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, হৈবতপুরের মাঠ থেকে সাধারণ মানুষের ফসল তুলে নিয়ে যাওয়া, অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবিসহ নানা ধরণের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল হৈবতপুরবাসী। থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উলটো বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে গেছে। সরকার পতনের পর থেকে আনিছচক্র আত্বগোপন করে। কিন্তু সম্প্রতি ফের প্রকাশ্যে এসে বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে আনিছ বাহিনী।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার মিঠুন কুমার জানান, আহতদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনের মাথায় বেশকয়েকটি ক্ষত রয়েছে।

কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী বাবুল জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিষয়টির খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।

যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা বলেন, আওয়ামী লীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ফের সক্রিয় হয়ে উঠার চেষ্টা করছে। আধিপত্ত বিস্তারের চেষ্টা করছে। এর প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর ওপর হামলা চালিয়েছে। এ সময় গ্রামবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে আহত হয়েছেন যুবদলের নেতাকর্মীরা। তিনি জড়িতদের দ্রুত আটকের দাবি জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/এইচআই

ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ যশোর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর