সড়কপথে গতিসীমা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত: ইলিয়াস কাঞ্চন
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১৪ | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৭
ঢাকা: সরকার ২০২৪ সালে মোটরযানের গতিসীমা নির্দেশিকা জারি করেছে। তবে এই গতিসীমা নির্দেশিকা বাস্তবায়ন ও প্রয়োগের নির্দেশনা না থাকায় সুফল মিলছে না। তাই সরকারের উচিত দ্রুততম সময়ের মধ্যে গতিসীমা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করা। একইসঙ্গে মোটরসাইকেল চালকদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড (মানসম্মত) হেলমেট নির্দেশিকা তৈরি করা উচিৎ সরকারের।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘৪র্থ বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সন্মেলন: অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের নিকট প্রত্যাশা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।
রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নিসচার ভাইস চেয়ারম্যান লিটন এরশাদ। মারাকেশ সম্মেলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন ব্রাক রোড সেফটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার খালিদ মাহমুদ।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘দেশের তরুণ কিশোরসহ আপামর জনসাধারণের একটি সমন্বিত দাবি হচ্ছে সড়ক নিরাপত্তা আইনের বাস্তবায়ন। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর দেশব্যাপী একটি শক্তিশালী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই দাবি আরও জোরালো হয়েছে। এরপর সরকার ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ পাস করে। আইন পাস করা হলেও তাতে সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ের ঘাটতি ছিল যার সিংহভাগ ছিল পরিবহন বা যানবাহন কেন্দ্রিক। ফলশ্রুতিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের এবং প্রাণহানির ঘটনা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আসন্ন সম্মেলনে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। বর্তমানে দেশে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন বা বিধি নেই। তাই সরকারের উচিত একটি সমন্বিত সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা। পাশাপাশি বৈশ্বিক পরিকল্পনায় সুপারিশ করা পাঁচটি ক্ষেত্রকেও (বহুমুখী পরিবহন ব্যবস্থা ও যথাযথ ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, নিরাপদ যানবাহন, নিরাপদ সড়ক ব্যবহারকারী, দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা) এর আওতাভুক্ত করতে হবে।’
মূলত, আগামী ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি মরক্কোতে ৪র্থ বিশ্ব সড়ক নিরাপত্তা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে বাংলাদেশ থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধিরা অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সেই সম্মেলনে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের বিষয়ে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়েই রোড সেফটি কোয়ালিশন বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্র্বতী সরকারের নিকট ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনার জন্য মরক্কোর মারাকেশে ৪র্থ মিনিস্ট্রিয়াল সম্মেলনে অঙ্গীকার করার দাবি জানানো হয়। সেইসাথে পৃথক একটি সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়। উল্লেখ্য সড়ক নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রণয়নে সরকার ইতিমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। সেইসাথে দেশে সড়ক দুঘর্ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে চালকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, কোয়ালিশন সদস্য বিএনএনআরসি’র সিইও এ এইচ এম বজলুর রহমান, স্টেপসের সিইও রঞ্জন কর্মকার, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক বজলুর রহমান, সিআইপিআরবি’র রোড সেফটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার কাজী বোরহান উদ্দিন, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের অ্যাডভোকেসি অফিসার তরিকুল ইসলাম, ব্রাকের কমিউনিকেশন অফিসার তামান্না রহমান, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির রোড সেফটি প্রকল্প কর্মকর্তা শরাফত ই আলমসহ আরও অনেকে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমপি