চবি’র ৯ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৪৫ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৫২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি বহিষ্কৃত ১২ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জনের বহিষ্কারাদেশ বাতিল চেয়ে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ মানববন্ধন হয়েছে। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘অন্যায় বহিষ্কার, মানি না, মানব না’; ‘আমার বোন মধু না, এই প্রক্টর মানি না’; ‘জুলাইয়ের হাওয়া এখনো বইছে’ এমন লেখাসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান করেন।
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সম্পাদক আল মাশনূন বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ন্যক্করজনক ঘটনা ঘটেছে। ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নৌকা ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুলাই আন্দোলনের আমাদের নারী সহযোদ্ধাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী রাতে নৌকা ভাঙতে গেছে। এই কাজ প্রশাসনের করা উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন তা করে নাই। ঘটনাস্থলে শিক্ষক ছাত্রীদের গালিগাজ করেছে। কিন্তু উল্টো ছাত্রীদের বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেসবুক পোস্টে বিপ্লবীদের হানি ট্র্যাপে পড়ার কথা বলেছেন। আমরা ওনার কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে বহিষ্কৃত ছাত্রীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।’
স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র জগলুল আহমেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আওয়ামী লীগের ব্যাপারে যতটা নমনীয়, আমাদের বেলায় ততটাই কঠোর। এটা তাদের প্রতিটি পদক্ষেপে বোঝা যাচ্ছে। আমরা অবিলম্বে বহিষ্কৃত ছাত্রীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই।’
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমিও শিক্ষকদের পক্ষ থেকে সমন্বয়েকর দায়িত্ব পালন করেছিলাম। আমি শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে না। ফেসবুকে আমার পোস্টও সকল শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে না। কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা সব পরিস্থিতিতেই ফায়দা হাসিল করতে চায়। এমন পল্টিবাজদের বিরুদ্ধেই ছিল এই পোস্ট। আমি আমার আরেকটা পোস্টে বিষয়টা পরিষ্কার করেছি।’
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা হল’র সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যান কিছু শিক্ষার্থী। এতে ওই হলের আবাসিক ছাত্রীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। কয়েকজন সাংবাদিক এ ঘটনার ভিডিওধারণ শুরু করলে ছাত্রীরা তাদের সঙ্গেও বাকবিতণ্ডায় জড়ান বলে অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি’র সদস্যরা সেখানে গেলে হলের আবাসিক ছাত্রীদের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছিত করা, ধর্ম অবমাননাসহ আরও বিভিন্ন অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়।
তবে আবাসিক হলের ছাত্রীরা বলছেন, তারা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে অবস্থান নেননি। তাদের দাবি ছিল, কোনো শিক্ষার্থী নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই যেন সেটি ভেঙ্গে দেয়।
সারাবাংলা/এমআর/ইআ