Friday 21 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফুলে ফুলে ভরে গেছে গাছ
রূপের নদী যাদুকাটার তীরে চোখজুড়ানো শিমুল

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:১৯

সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীর তীরের শিমুলবাগান।

সুনামগঞ্জ: বসন্তের আগমনে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের জাদুকাটা নদীর তীরের শিমুলবাগান এখন ফুলে ফুলে ভরে গেছে। এ যেন শতকোটি শিমুল ফুলের রাজত্ব। কল্পনার স্বর্গরাজ্য। এমন সৌন্দর্যে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে ভিড় করছেন পর্যটকরা। এখানে শিমুলবাগান দেখতে এলে একই সঙ্গে হাওর, নদী, পাহাড়ের দেখা মেলে।

শিমুল ফুল।

সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে সীমান্ত এলাকা তাহিরপুর উপজেলার রুপের নদী যাদুকাটা‘র নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রামে ১০০ বিঘা জমিরও বেশি জায়গা জুড়ে ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে উঠে এশিয়ার সর্ববৃহৎ শিমুল গাছের বাগান। এ বাগানের নাম ‘জয়নাল শিমুলবাগান’। ফ্লাগুন মাস শুরু হওয়ার কয়েক দিন আগ থেকে ফুল ফুটতে থাকে। ফেব্রুয়ারি মাসজুড়েই গাছে ফুল থাকে। এরপর আস্তে আস্তে ঝরতে থাকে ফুল। ফুল ঝরে গাছে নতুন পাতা গজায়, ফের সবুজে ভরে উঠে।

বিজ্ঞাপন

পর্যটক

২০০১ সালে মানিগাঁও গ্রামের ব্যবসায়ী বৃক্ষপ্রেমী জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানটি গড়ে তোলেন। তিনি নিজের প্রায় ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে সৌখিনতার বসে প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করেন। বেড়ে উঠা এ শিমুল গাছের বাগান এখন জনপ্রিয় পর্যটন স্পট হয়ে উঠেছে। শখের এ বাগান থেকে বছরে আয় আসছে প্রায় কোটি টাকা।

পাহাড়ি নদী জাদুকাটার তীরের এ শিমুলবাগানের গাছে গাছে রক্তরাঙা লাল শিমুল ফুলে সবাই মুগ্ধ। বসন্তের হাওয়ায় ভারতের মেঘালয় খাসিয়া পাহাড় থেকে এসে দোলা দিচ্ছে বাগানের প্রতিটি শিমুল ফুলের গাছে। সে হাওয়ায় ঝরে পড়ছে রক্তরাঙা লাল শিমুল ফুল। সে ফুল কুঁড়ায় বালক বালিকারা দলবেঁধে ছুটছে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ।

বিজ্ঞাপন

এ শিমুলবাগানের তিন হাজার শিমুল গাছ রয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০০ শিমুল গাছে ফুল ফুটেছে। এখানে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি পর্যটক আসছেন। বাগানে প্রবেশ করতে জনপ্রতি গুণতে হচ্ছে ৫০ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততা। সেই সঙ্গে ঝরে পড়া শিমুল ফুল দিয়ে ভালোবাসার প্রতীক তৈরি করে অর্থ উপার্জন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে চাঙা হয়ে উঠছে উত্তর জনপদের অর্থনীতি।

হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের সীমান্ত এলাকার পর্যটন স্পট শিমুল বাগান বসন্তে সৌন্দর্য সবাইকে বিমোহিত করে। বিশেষ করে শীত মৌসুমের শেষে ফাগুনের শুরুতেই তাহিরপুরের শিমুলবাগানের শিমুল ফুল গুলো সাজে প্রকৃতির লাল আভার রক্তিম ভিন্ন রুপে। যার রুপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে যাচ্ছেন পর্যটকরা।

পর্যটকদের সুবিধার জন্য বাগানে ক্যানটিন চালু করা হয়েছে। রয়েছে বিশ্রামের সুব্যবস্থা। উপজেলা প্রশাসন থেকে একটি গেস্টহাউসও করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় বিশেষ দিনগুলোতে থাকছে পুলিশের টহল। সৌন্দর্যবর্ধনসহ আরও কিছু কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে বাগান মালিকদের।

ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শিমুলবাগানে ঘুরতে এসেছি। এখানের সৌন্দর্য দেখে সত্যি আমরা মুগ্ধ। স্থানটি অনেক সুন্দর। রক্তরাঙা শিমুলের বাসন্তি অভিবাদনে আমরা ছুটে আসছি সবাই।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, ‘ফাগুনে সৌন্দর্য উপভোগ করতে যাতে কোনো পর্যটক হয়রানিতে না পড়তে হয় সেই জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। এ ছাড়া যাতায়াতে জন্য গাড়ি চালকরা পর্যটকদের কাছ থেকে যাতে বেশি ভাড়া নিতে না পারে সে দিকে প্রশাসনের নজড় রয়েছে।

সারাবাংলা/এসআর

তাহিরপুর উপজেলা যাদুকাটা নদী রূপের নদী শিমুল ফুল শিমুলবাগান সুনামগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর