Saturday 22 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমে উঠেছে বই মেলা, বাড়েনি বিক্রি

ঝর্ণা রায়
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫১ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৭

বইমেলার গেইটে সারিবদ্ধভাবে এভাবেই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করেন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ১৭ দিন পার করেছে অমর একুশে বইমেলা। পাঠক-দর্শনার্থীদের পদচারণায় জমজমাট মেলা প্রাঙ্গন। কেউ আসছেন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াতে, কেউ বই কিনতে আবার কেউ মেলা দেখতে। তবে দর্শনার্থীদের সংখ্যার তুলনায় বেচাবিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে না বলে হতাশা প্রকাশ করেন বিক্রেতারা। তারা বলছেন, বই কেনার চেয়ে দেখার মানুষের সংখ্যাই বেশি। আবার অনেকে আসেন বই হাতে নিয়ে ছবি তুলতে। মেলার ১৭ দিন পার হলেও ওভাবে বিক্রি বাড়েনি। কেউ কেউ বলছেন, মেলাকে ঘিরে যে খরচ হয়েছে, এভাবে মেলা চললে তা ওঠবে না।

বিজ্ঞাপন

বইমেলা কানায় কানায় পূর্ণ। ছবি: সারাবাংলা

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অমর একুশে বইমেলা চত্বরে দেখা যায় দর্শনার্থীতে পূর্ণ। তিনটায় মেলার প্রবেশ দ্বার খুলে দেওয়ার পর থেকেই জমে উঠতে থাকে বইমেলা। কেউ কেউ মেলায় এসেছেন পরিবার পরিজন নিয়ে, আবার কেউ প্রিয় মানুষ নিয়ে। আবার স্কুলের শিক্ষার্থীরা এসেছেন শিক্ষকদের সঙ্গে।

মেলায় ঢুকতেই হাতের ডান দিকে শিশু চত্বর। সেখানে শিশুতোষ সব ধরনের বই পাওয়া যায়। সপ্তম শ্রেণির নুসাইবাকে নিয়ে তার বাবা নাসির আসছেন বইমেলায়। নুসাইবা তিনটি বই কিনেছেন। সবগুলোই গল্প আর ছড়ার বই। তিনি সারাবাংলাকে জানান, প্রতি বইমেলাতেই বাবা মায়ের সঙ্গে আসেন। শিশুটির বাবা নাসির উদ্দীন বলেন, ‘বাচ্চাদের খেলা বা দেখার জন্য ঢাকায় তেমন সুযোগ নেই। ঘর, ইনডোর প্লে গ্রাউন্ড, পার্ক এর মধ্যেই জীবন। বইমেলাতে ভিন্ন পরিবেশ। বই কেনা সেই সঙ্গে ঘুরে দেখা অন্য রকম আনন্দ দেয় বাচ্চাদের।’

বইয়ের স্টলে থাকা কর্মীরা হাসিমুখে বই দেখান পাঠক-দর্শনার্থীদের। ছবি: সারাবাংলা

বই কিনতে আসা আরেক অভিভাবক উত্তম কুমার সরকার বলেন, ‘অফিস শেষ করে এসেছি। একটু দেখে যাবো, ছুটির দিনে বাচ্চাদের নিয়ে আসব। আগে আসতাম বন্ধুদের সঙ্গে, এখন পরিবার নিয়ে।’

শিশুদের চেয়ে বড়দের বই বিক্রির স্টল গুলোতে বেশ ভীড় দেখা গেল। অক্ষর প্রকাশনীতে দেখা গেল উপচে পড়া ক্রেতা। পাতা উলটাচ্ছে, দাম জানতে চাচ্ছে। দেখে মনে হচ্ছে অনেকগুলো বই কিনবেন। কিন্তু ঘটেছে উলটো, বই রেখে কিছু না বলেই চলে গেলেন। এই স্টলের কর্মী সুজানা বলেন, ‘এভাবেই আসে বই হাতে নেয়, ছবি তোলে, দাম জিজ্ঞেস করে তারপর চলে যান। তবে সবাই এমন করে বিষয়টা তা নয়।’

বিজ্ঞাপন

অমর একুশে বইমেলা। ছবি: সারাবাংলা

ঐতিহ্য প্রকাশনীর কর্মী সুমন বলেন, ‘১৭ দিন হয়ে গেল, ওভাবে বিক্রি হয়নি। শেষ দিকে হয় কিনা সেটার জন্য অপেক্ষা।’

পুথি নিলয় স্টলের কর্মী অসীম জানান, বেচাকেনা আছে মোটামুটি তবে শেষ দিকে বাড়তে পারে।

বরাবরের মতো এবারও বইমেলায় ডাক্তার চেম্বার রয়েছে। এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও রক্তদান কর্মসূচি চলে। সেখানে মোটামুটি ভীড় দেখা গেল। তবে ইসলামিক বইয়ের বেচাকেনা এবার তুলনামূলক বেশি হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকটি স্টলে ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা সমাগমও বেশ। ইত্তিহাদ স্টলের কর্মী সালাম জানান, বেশ ভাল বেচাকেনা হচ্ছে। গত দুই বছর ধরে তারা মেলায় স্টল দিচ্ছেন। এবার ব্যাপক সারা পেয়েছেন। অনেকটা একই তথ্য দিয়েছেন অন্য স্টলের কর্মীরাও।

বাবা মায়ের সঙ্গে এসে গল্প ও ছড়ার বই কিনছেন শিশুরা।

জিয়া বাড়িতে যে সকল বই সবই রাজনৈতিক। এখানে মানুষ আসে, ঘোরে দেখে এবং ছবি তুলে চলে যায়।

এবারও অন্ধ শিশুদের জন্য বই নিয়ে এসেছে স্পর্শ। স্টলটির সেচ্ছাসেবক আরিফুর রহমান বলেন, ‘আমরা বই বিক্রি করি না, বই বিনামূল্যে বিতরণ করি। ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে আমরা বই বিতরণ শুরু করব।’

এদিকে প্রতিদিনই নতুন নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বাংলা একাডেমির তথ্য মতে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১৩টি নতুন বই এসেছে। সব মিলিয়ে গত ১৭ দিনে ১ হাজার ৬৪৪টি নতুন বই জমা হয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/এইচআই

অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ বইমেলা ২০২৫

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর