ঢাকা: খুলনায় বেড়েছে মশার উপদ্রব। মশার উৎপাতে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন নগরবাসী। মশা নিধনের জন্য নেই ফগার মেশিন, ওষুধ ও জনবল। বর্তমানে মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ রয়েছে, এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খোদ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের মধ্যেই। ওষুধ ছিটানো হলেও মশা নিধন হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সিটি করর্পোরেশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা মশা নিধন নিয়ে নগরবাসীর কাছে নানা ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। জনগণের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মশা নিধনে ওষুধসহ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ টাকা দিয়ে ওষুধ দেওয়ার জন্য ফগার মেশিন, ড্রেন পরিস্কার করার জন্য আধুনিক যন্ত্র ও ওষুধ কিনতে হবে সিটি কর্পোরেশনের। তাদের মতে, মশা নিধনের জন্য বাজেট কম।
সিটি করর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, মশা নিধনের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা ২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। মশা নিধনের ঔধষ ছিটানোর জন্য ফগার মেশিনের সংকট রয়েছে। এয়াড়া বর্তমানে যে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে, সে ওষুধের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর সিটি করর্পোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু মশার উপদ্রব খুব বেশী ছিল। ফলে খুলনা শহরকে ওই সময় ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রভাব নেই। তবু নগরবাসী মশার উপদ্রবের কারণে ডেঙ্গু জ্বরের আতঙ্কে ভুগছেন।
সিটি করর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, বিগত দিনে খুলনা শহরে ওয়ার্ড কমিশনার ছিল। বর্তমানে ওয়ার্ড কমিশনারের দায়িত্ব সিটি করর্পোরেশনেরই পালন করতে হচ্ছে। গত বছর মশা নিধনের জন্য যে ওষুধ ব্যবহার করা হতো, সেই ওষুধ পাল্টিয়ে নতুন করে মশা নিধনের ওষুধ ক্রয় করা হয়ছে। কিন্তু ক্রয় করা নতুন ওষুধেও মশা নিধন হচ্ছে না।এছাড়াা খুলনা শহরের প্রতিটি ড্রেন ময়লা আবর্জনায় বন্ধ হয়ে রয়েছে। পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। শহরের ড্রেনের পানি নিষ্কাশন হয় টুটপাড়া খালসহ অন্যান্য খাল দিয়ে। টুটপাড়া খালের মুখ বন্ধ রয়েছে।
জেলার টুট পাড়া, মরিয়ম পাড়া, দারোগা পাড়া, সোনাডাঙ্গা নিরালা আবাসিক প্রকল্প এলাকারা বাসিন্দারা জানান, দিনের বেলায়ও মশার কয়েল জ্বালিয়ে ঘরে থাকতে হয় তাদের। বাচ্চাদের রাখা হচ্ছে মশারি টানিয়ে।
খুলনার হাদিস পার্কে গিয়েও দেখা গেছে মশার উপদ্রব। হাদিস পার্কে ঘুরতে যাওয়া টুটপাড়ার বাসিন্দা ( গৃহিনী) জানান, ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন হাদিস পার্কে এসেছিলাম মন ভাল করতে। এখানে এসেও মশার কামড়ে অতিষ্ট।
এদিকে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন যে, মশা নিধনের জন্য ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। প্রতিদিনই মশা নিধনের জন্য ওষুধ দেওয়া হয়। তবে তাদের কথার বাস্তবতা গত ৭ দিনেও চোখে পড়েনি।
এসব বিষয় নিযে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কার তাজুল ইসলাম মুঠো ফোনে জানান, খুলনায় মশার উপদ্রব বেড়েছে ঠিকই। কারণ শহরের ড্রেনগুলো পরিস্কার করা যাচ্ছে না। ড্রেনগুলো জ্যাম হয়ে আছে। ড্রেন পরিস্কার করার জন্য ত্যাধুনিক মেশিন ক্রয়ের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া খুলনা সিটি করর্পোরেশনের কিছু ঘাটতি রয়েছে। একদিকে যেমন সিটি কর্পোরেশনে জনবল কম রয়েছে। অপরদিকে শহরের ওয়ার্ডগুলোতে জনপ্রতিনিধি (কাউন্সিলর) নেই।