Saturday 22 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভরাট হয়ে গেছে খাল, তরমুজ চাষে পানি সেচ নিয়ে শঙ্কা

মনিরুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৮

আগাম জাতের তরমুজ। ছবি: সারাবাংলা।

পটুয়াখালী: পটুয়াখালীতে তরমুজ খেতে পরিমিত পানি সেচ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। চরাঞ্চলে মিষ্টি পানির অভাবে তরমুজের ভালো ফলন উৎপাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বেশির ভাগ খাল পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্ষায় ধারণ হওয়া খালের পানি শুকিয়ে গেছে। চাষিরা তরমুজ গাছ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে নদীর লবণ পানি ব্যবহার করেছেন। যে কারণে ফলন কমে গেছে। এতে লোকসান গুনতে হবে তাদের। এমন পরিস্থিতিতে ফসলের উৎপাদন বাড়াতে খাল খননের দাবি জানান স্থানীয় কৃষকরা।

বিজ্ঞাপন

আগাম জাতের তরমুজের ব্যাপক চাহিদা। মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই এ তরজুম পাওয়া যায়। দামও পাওয়া যায় ভালো। লাভজনক হওয়ায় জেলায় দিনদিন বাড়ছে এ জাতের তরমুজের চাষ। গত কয়েক বছর এ উপকূলে বাম্পার ফলন হয়েছে। এবারও ব্যাপকভাবে চাষ হয়েছে আগাম জাতের তরমুজ। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফলন না পাওয়ায় চাষিরা হতাশ।

চলতি মৌসুমে আগাম জাতের তরমুজ বাজারে আসতে শুরু হয়েছে। এদিকে, বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি পানির অভাবে খেত শুকিয়ে মরে যাচ্ছে গাছ। ঝরে পড়ছে ফুল ও ফল। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন বেশিরভাগ কৃষক। তরমুজ খেতে পরিমিত মিষ্টি পানির অভাবে ভালো ফলন না পাওয়ার আশঙ্কা তাদের।

জানা গেছে, পটুয়াখালীতে চলতি মৌসুমে ৩৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ৫০০ হেক্টর জমিতে হয়েছে আগাম চাষ। অনুকূল আবহাওয়া, বালাই সংক্রমন না থাকলে হেক্টর প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ টন তরমুজ উৎপাদনের প্রত্যাশা করছেন কৃষি বিভাগ।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপকূলীয় অনেক এলাকায় পলি জমে খাল ভরাট হয়ে শুকিয়ে গেছে। খালের গভীরতা না থাকায় বর্ষা মৌসুমের পানি দ্রুত শুকিয়ে গেছে। এখন প্রয়োজনের সময় কৃষক খেতে পানি দিতে পারছেন না। জমিতে পরিমিত পানি না দেওয়া গেলে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যাবে না বলে উদ্বিগ্ন চাষিরা। এমন পরিস্থিতিতে মিষ্টি পানির সংরক্ষণ বাড়াতে উপকূলীয় এলাকার ভরাট হয়ে যাওয়া খাল খননের দাবি জানান তারা।

ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামের তরমুজ চাষি রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, ‘১০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে তিন লাখ টাকা। ১২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি আশা করছিলাম। কিন্তু এখন যে অবস্থা দেখছি খরচের টাকা উঠে কিনা তা নিয়ে চিন্তিত।’

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় কৃষকরা বলেছেন, খাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে গাছে নদীর লবন পানি ব্যবহার করতে হয়েছে। যে কারণে ফলন অনেক কম হয়েছে। খালগুলো খনন করে পর্যাপ্ত মিষ্টি পানি ধরে রাখতে পারলে কৃষক উপকৃত হবেন। না হয় আগামীতে তরমুজ চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষক।

তরমুজ চাষি মনির হাওলাদর বলেন, ‘অনেক তরমুজ গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। আবার ফল ঝরে যাচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে আমরা সহযোগীতা ও পরামর্শ পাইনা, কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে পরিদর্শনেও আসেন না। জমিতে লবন পানি ব্যবহারের কারণে তরমুজ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে বলে ধারণা করছি আমরা।

তরমুজ ব্যবসায়ী মস্তফা বলেন, ‘বাজারে আগাম জাতের তরমুজ আসতে শুরু করেছে। গড়ে প্রতি পিস ৬২ টাকায় দরে আমরা কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করেছি। বিক্রি করছি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়।

কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরাফাত হোসেন বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে উন্নত জাতের তরমুজের আগাম চাষাবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে। অতিমাত্রায় বালাইনাশক প্রয়োগ যাতে না করে সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা হয়েছে। এছাড়া মিষ্টি পানি সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

সারাবাংলা/এসআর

আগাম জাতের তরমুজ খাল ভরাট তরমুজ পটুয়াখালী পানি সেচ নিয়ে শঙ্কা মিষ্টি পানির অভাব সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

পঞ্চগড়ে প্রধান শিক্ষককে রাজকীয় বিদায়
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর