মিশরে ১০০ বছর পর ফারাও-এর সমাধি আবিষ্কার
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৮ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৪৪
১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদদের দ্বারা তুতানখামুনের সমাধি আবিষ্কারের প্রায় ১০০ বছর পর প্রথম কোনো ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কার হলো। মিশরের পর্যটন ও প্রত্নতত্ত্ব মন্ত্রী শেরিফ ফাতি বলেন, ‘এটি মিশরবিদ্যার ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা এবং মানব সভ্যতার ইতিহাস বোঝার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।’
মিশরে তুতানখামুনের পর এই প্রথম কোনো ফারাওয়ের সমাধি আবিষ্কৃত হয়েছে। মিশরবিদরা ১৮তম রাজবংশের ফারাও তুতমোসিস দ্বিতীয়ের সমাধি শনাক্ত করেছেন, যা এতদিন অজানা ছিল।
একটি ব্রিটিশ-মিশরীয় গবেষক দল লাক্সরের কাছে থিবান নেক্রোপলিসের পশ্চিম উপত্যকায় এই সমাধির অবস্থান চিহ্নিত করেছে। গবেষকরা এতদিন মনে করেছেন ১৮তম রাজবংশের ফারাওদের সমাধিগুলো রাজাদের উপত্যকার প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

ফারাও তুতমোসিস দ্বিতীয়ের সমাধি প্রবেশপথ
প্রাথমিকভাবে, অনুসন্ধানকারী দল এটি রাজপরিবারের নারীদের সমাধিক্ষেত্র হিসেবে মনে করছিল। তবে সমাধির ভেতরে প্রবেশ করার পর সেখানে ফারাওদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহৃত নীল ও হলুদ তারামণ্ডিত সিলিং দেখতে পান, যা ফারাওয়ের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।
তুতমোসিস দ্বিতীয় ছিলেন তুতানখামুনের পূর্বপুরুষ, যার রাজত্বকাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৪৯৩ থেকে ১৪৭৯ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি ছিলেন বিখ্যাত নারী ফারাও হাটশেপসুটের স্বামী, যিনি মিশরের ইতিহাসের অন্যতম সফল শাসক ছিলেন।
বিজ্ঞানীরা দুই শতাব্দী আগে তুতমোসিস দ্বিতীয়ের মমি খুঁজে পান, কিন্তু তার মূল সমাধির অবস্থান এতদিন অজানা ছিল।
ড. লিথারল্যান্ড জানান, সমাধির বৃহৎ সিঁড়ি ও দীর্ঘ প্রবেশপথ এর বিশালতা বোঝায় যে এটি রাজকীয় সমাধি। তবে এটি পানির নিচে নিমজ্জিত ছিল, কারণ এটি একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাতের নিচে নির্মিত হয়েছিল।
গবেষকরা ভাঙা অ্যালাবাস্টার পাত্রের টুকরো খুঁজে পান, যাতে তুতমোসিস দ্বিতীয় ও হাটশেপসুটের নাম খোদাই করা ছিল। এগুলোই ছিল সমাধির মালিক শনাক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
এই আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে গবেষক দল ১২ বছরেরও বেশি সময়ের প্রচেষ্টার সফল পরিণতি পেয়েছে। তাদের পরবর্তী লক্ষ্য সম্ভবত অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়া তুতমোসিস দ্বিতীয়ের দ্বিতীয় সমাধির অবস্থান নির্ধারণ করা।
প্রসঙ্গত, প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার রাজবংশের রাজাদের উপাধি ছিল ‘ফারাও’ বা ‘ফেরাউন’। ফারাও পদটি ছিল বংশানুক্রমিক। ফারাওরা মূলত স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে দেশ শাসন করত।
সারাবাংলা/এনজে