গরুর মাংসের ঘাটতি পূরণে মহিষ পালনের আহ্বান প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৪৬ | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৫২
ঢাকা: গরুর মাংসের চাহিদা পূরণে মহিষ ও ভেড়া পালনের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আকতার। মহিষকে অত্যন্ত মূল্যবান প্রাণি উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, মহিষের মাংস গরুর মাংসের ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোলার মনপুরা উপজেলার ঢালচরে জেলেদের সঙ্গে জেলে নিবন্ধন হালনাগাদ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের তালিকায় অনেক অমৎস্যজীবী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, এটা অন্যায়। তাই তালিকা এমনভাবে হালনাগাদ করা হবে যেন অন্যায়ভাবে কেউ তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে।’
নারী মৎস্যজীবীদের তালিকায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘নারী জেলেরা যেন দৃশ্যমান হয় তাদের যেন তালিকায় নাম থাকে এবং একই পরিবারে পুরুষ জেলে থাকলেও নারীদের অগ্রাধিকার দিতে চাই। কোন অমৎস্যজীবী তালিকায় প্রবেশ করতে না পারে তা কঠোরভাবে দেখা হবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘পানি থাকলে মাছ থাকবে। নদী, নালা, খাল, বিল খননের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু খনন করার দায়িত্ব মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নয়। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করবো, তারা যেন খনন করে মৎস্যসম্পদকে রক্ষা করে।’
সরকারি চাকুরিজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চল বলে কিছু থাকতে পারে না। মনপুরার জেলেরা ইলিশ মাছ দেশবাসীকে খাওয়াচ্ছে, আর সরকারি চাকুরিজীবীরা এ অঞ্চলের মানুষদের সেবা দিবেন না- তা হতে পারে না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা গবেষণা করে দেখেছি, আমাদের ব্যান পিরিয়ডে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ইলিশ মাছ ধরছে, অথচ আমাদের জেলেরা সে সময় বসে থাকে। আর এই নিষেধাজ্ঞা এমনভাবে করা হচ্ছে যেন ভারতীয় জেলেরা কোনভাবেই আমাদের দেশ থেকে ইলিশ ধরতে না পারে। আর সেজন্যই নিষেধাজ্ঞা সময় আটান্ন দিন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেকার সমস্যা দূরীভূত করতে শুধু মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় একা পারবে না সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তরুণরা আমাদের নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে; আমরা যেন বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারি তার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।’
নৌ পরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্হান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ঢালচরের মানুষের কষ্টের কথা বিবেচনা করে এখানে ঘাট তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলের মানুষ বিশেষকরে মৎস্যজীবীরা অনেক উপকৃত হবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারণা হলো প্রত্যন্ত এলাকার উন্নয়ন। ঢাকায় বসে উন্নয়নের কথা বললে হবে না, যখন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো যাবে তখনই হবে টেকসই উন্নয়ন।’
পরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এবং নৌ পরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্হান উপদেষ্টা মনপুরার বিভিন্ন চরাঞ্চালের নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে নিবন্ধিত কার্ড বিতরণ করেন।
মনপুরা উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মৎস্য দফতর আয়োজনে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিখন বনিকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) সুরাইয়া আখতার জাহান, মৎস্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরী, কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের বিএন স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট সাব্বির আহমেদ, মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, মৎস্য অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, মনপুরা উপজেলার মৎস্যজীবী ও মৎস্যজীবী প্রতিনিধি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি
উপদেষ্টা ফরিদা আকতার নারী মৎস্যজীবী মৎস ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মৎস্যজীবী