মেলায় বাজছে বিদায়ের সুর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫৯
ঢাকা: নতুন আশা, প্রত্যাশা নিয়ে প্রতি বছর অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়। লেখক, সাহিত্যিকদের প্রত্যাশা থাকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় এ মেলা ভূমিকা রাখবে। আরও প্রত্যাশা থাকে পাঠকের মধ্যে সৃজনশীলতা, বিনয় ও মানবিকতার বিকাশ ঘটবে। বহু প্রত্যাশার সে মেলা এ বছর শেষ পর্যায়ে। বইপ্রেমীদের হৃদয়ে বাজছে বিদায়ের সুর। মেলা রয়েছে মাত্র আর ৩ দিন।
মেলার ২৫তম দিন পুরো ৬ ঘণ্টায় দর্শনার্থীদের ভিড় নেই বললেই ছিল। অধিকাংশ স্টলের কর্মীরা অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। অল্প বিস্তর যে সকল দর্শনার্থী স্টল যাচ্ছিলেন তাদের বেশিরভাগই বই উল্টে পাল্টে দেখে রেখে দিচ্ছিলেন। আবার কেউ কেউ তো বই না কিনলেও পড়ার ভঙ্গি করে ছবি তুলছিলেন। স্টলকর্মীরা হাসি মুখে এসব মেনেও নিচ্ছিলেন।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫। ছবি: সারাবাংলা
এ বছর সবচেয়ে মেলায় প্রতিটা সময় হকার, ভিক্ষুকের উপদ্রব দেখা গেছে। ২৫ ফেব্রুয়ারি নতুন দেখা গেল হিজরা জনগোষ্ঠীর চাঁদা উত্তোলন। তারা মেলায় আগত দর্শনার্থীদের কাছ থেকে নানাভাবে ১০ টাকা, ২০ টাকা করে নিচ্ছিলেন। যারা দিতে চাচ্ছিলেন না, তাদেরকে কটুক্তির শিকার হতে হচ্ছিল। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পুলিশ কিংবা আনসার এসব দেখেও ছিলো নির্বিকার।
মোড়ক উন্মোচন মঞ্চের সামনের উন্মুক্ত জায়গায় জমেছিলো বিরাট একটা আড্ডা। ৪০-৫০ শিক্ষার্থীর একটি দল গোল হয়ে বসে সমস্বরে গান, কবিতা আবৃত্তি করছিল। তাদের সে আড্ডা পাশে দাঁড়িয়ে অনেকেই উপভোগ করছিলো।

অমর একুশে বইমেলা। ছবি: সারাবাংলা
এবারের মেলা কেমন জমলো? এমন প্রশ্নে মওলা ব্রাদার্সের বিক্রয়কর্মী নেহাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি গেল ৩-৪ বছর ধরে মেলায় বিভিন্ন স্টলে কাজ করি। কিন্তু এবারের মেলায় তুলনামূলক ক্রেতা অনেক কম। আমরা হয়তো বড় প্রকাশনা সংস্থা দেখে বিক্রয় ভালো হয়েছে। কিন্তু গেল কয়েক বছরের তুলনায় অনেক কম।’
ঐতিহ্যের কর্ণধার আবদুল্লাহ আল নাঈম আরাফ বলেন, বই বিক্রি কম হয়েছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। অন্যান্য বছর মেলার শেষের দিকে প্রচুর ভিড়ের পাশাপাশি বিক্রি অনেক বেশি থাকে। এ বছর তো তা দেখছি না। মেলার তো আছে আর তিন দিন।

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫। ছবি: সারাবাংলা
বই বিক্রি কম হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করলেন বাতিঘর প্রকাশনীর প্রকাশক ও লেখক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশ একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখনও সবকিছু স্বাভাবিক হয়নি। যার কারণে মেলায় এসে বই কিনে এমন মানুষজন কম এসেছে এবার। যারা প্রকৃত পাঠক তাদের বেশিরভাগই অনলাইনে বই কিনছে।’
মিরপুর বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী তিথি সারাবাংলাকে বলেন, ‘বইমেলায় আমি ২৫ দিনের মধ্যে ২৩ দিনই এসেছি। মেলা যখন শেষ হয়ে যায়, তখন মন খারাপ হয়ে যায়। এ বছর তো মেলা বলতে গেলে শেষ পর্যায়ে। তাই বলতে গেলে খারাপ লাগা কাজ করছে।’
সারাবাংলা/এজেডএস