Sunday 09 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মামলা সিন্ডিকেট চক্র
মামলা করেই কোটি টাকা চাঁদা দাবি, জানে না ভিকটিমের পরিবার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:২৫ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১২

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদুল ইসলাম। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে শহিদ হন মুফতি শিহাব উদ্দিন। তার বাবার নাম খলিলরদ্দি। ওই সময় একাধিক ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় ৫ আগস্টের পর একাধিক মামলা হয়। তবে শিহাব উদ্দিনের পরিবার থেকে আলাদা মামলা করা হয়নি। কিন্তু সাত মাস পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন মো. রফিক পাটোয়ারী নামে এক ব্যক্তি। তবে তিনি শিহাবের পরিবারের কেউ নন।

বিজ্ঞাপন

ওই ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সাবেক একাধিক মন্ত্রীসহ ১০০ জনকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে। তিনি শুধু মামলা করেই থেমে নেই। ওই মামলায় বর্ণিত ৬৪ নম্বর আসামি তৌহিদুল ইসলামকে ফোন করে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা দিলে মামলা তুলে নেওয়ার আশ্বাসের পাশাপাশি টাকা না দিলে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তৌহিদুল ইসলাম।

তৌহিদুল ইসলাম একজন লন্ডন প্রবাসী। তিনি বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। সেই দলের সদস্য সচিব তিনি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যেদিন শিহাব উদ্দিন শহিদ হয়েছেন সেদিন বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি আত্মপ্রকাশ হয়। ঘটনার সাত মাস পর এসে ১৯ ফেব্রুয়ারি মামলা করা হলো। মামলার পর দিন ২০ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে মোবাইল থেকে কল করে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।’

টাকা দিলে কীভাবে মামলাটি তুলে নেওয়া হবে? জানতে চাইলে হুমকিদাতা বলেন, ‘এরকম অনেক মামলা আমরা তুলে নিয়েছি। যেখানে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বড় নেতারা আসামি ছিলেন। বিশ্বাস জোগাতে হুমকিদাতা একটি মামলার কাগজপত্রও পাঠান। ওই কাগজপত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের সই করা মামলা ডিসমিসের একটি কপিও রয়েছে।’

তিনি জানান, হুমকির বিষয়টি আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত জানানো হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়েছে। জবাবে কমিশনার বলেছেন, এ বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের জনৈক মিতা বেনজীর আহমেদের কাছে (যিনি সাবেক আইজিপি বেনজীরের হয়ে তদবির ও ঘুষ বাণিজ্য করতেন)। তার কাছে প্লট বিক্রয় বাবদ ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা পান। এ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। হাইকোর্ট বলেছে, বেনজীরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানোর জন্য। অথচ মামলাবাজ সিন্ডিকেটের হোতা বেনজীরকে খুঁজে পান না পুলিশ। কিন্তু ঠিকই মিথ্যা মামলা করেই চলেছেন। আমি মনে করছি, পাওনা টাকা না দিয়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমুলক মামলায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থানায় যে মামলাটি করেছেন সেই মামলার বাদী মো. রফিক পাটোয়ারী। বাদীর বাড়ি চাঁদপুরে। আর যিনি শহিদ হয়েছেন তার বাড়ি ভোলায়। শহিদ শিহাবের পরিবার থাকে যাত্রাবাড়ীতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিহাবের পরিবারের সঙ্গে মামলার বাদী রফিকের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি স্রেফ মামলা বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অংশ। মামলা করার জন্য শহিদ পরিবার থেকে কোনো অনুমোদনও দেওয়া হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআরপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন পলাশ, যুগ্ম সদস্য সচিব ড. নাজমুল করিম, যুগ্ম আহবায়ক মো. নাজমুল আলম, যুগ্ম সদস্য সচিব মোবারক হোসেন পারভেজ, মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী রফিক পাটোয়ারীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম

কোটি টাকা চাঁদা দাবি মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর