আসছে নতুন রাজনৈতিক দল, শীর্ষ পদে সবাই ঢাবির
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৭
ঢাকা: জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ থেকে বেরিয়ে সরকারকে সহায়তা করতে এসেছিল নতুন সংগঠন ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’। সেখান থেকে বেরিয়ে জনগণের চাহিদা মোতাবেক আসছে সমন্বয়কদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মানিক মিয়া এভিনিউতে দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন দলটির নেতারা। যেখানে শীর্ষ পাঁচ পদেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা থাকবেন বলে জানা গেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, দলটির নাম হতে পারে গণতান্ত্রিক নাগরিক শক্তি। আর এর নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। সে কারণে শিক্ষার্থীদের ছাত্রসংঠনটির নাম গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। যেটা মূলত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির হাত ধরে পরিচালিত হবে।
সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলটির আহ্বায়ক হবেন সদ্য সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। সদস্য সচিব পদে আসবেন আকতার হোসেন ও প্রধান সমন্বয়কারী পদে আসবেন নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী। এছাড়া, মুখ্য সংগঠক পদে আসবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলম।
শীর্ষ পাঁচ পদে আসা এ শিক্ষার্থীরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এখানে নাহিদ ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ সেশনের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। পাশাপাশি আকতার হোসেন ঢাবির আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। এ ছাড়া, নাসিরুদ্দিন পাঠোয়ারী ঢাবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের, হাসনাত আব্দুল্লাহ ঢাবির ইংরেজি বিভাগের ও সারজিস আলম ঢাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু ৫ আগস্টের পরে তাদের সেভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি। এমনকি নতুন যে ছাত্রসংগঠন এসেছে সেখানেও শীর্ষ সব পদে ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নতুন ছাত্র সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘোষণার সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিক্ষোভ শুরু করে। পরবর্তী সময়ে বিক্ষোভ থেকে এক পর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। ফলে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার আগেই সংবাদ সম্মেলন না করেই বেরিয়ে যেতে হয় নেতাকর্মীদের। আজও এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা কেউ কেউ।
নাম প্রকাশ না করের শর্তে নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ এক নেতা বলেন, ‘আসলে এখানে ঢাবি, আর ঢাবির বাইরের দেখে কাউকে বাদ দেব বা রাখব- এসব বিষয় বিবেচনা করে রাজনৈতিক দল করিনি। আমরা নেতৃত্ব ও তার যোগ্যতার দিকটিকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে চাই। যারা দল চালাতে পারবে তাদেরকেই শীর্ষ পদগুলোতে রাখা হবে। তাই, কেউ যদি এটাকে বৈষম্য মনে করে তাহলে তো সেটা দলের সঙ্গে একধরনের বৈষম্য। কারণ, একটা দল চালাতে হলে সেখানে নেতৃত্বের গুণাবলীসম্পন্ন লোক দরকার। আমরা সেটাকেই বিবেচনা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি অবশ্যই রাখব। আমাদের দলের নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করলে সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাব বলে আশা করি।’
ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে আমাদের কন্ট্রিবিউশন নিয়ে আশা করি বলতে হবে না। নতুন ছাত্রসংগঠনে আমাদের অন্তত একজনকে শীর্ষ পদে তারা রাখতে পারত। কিন্তু সেটা করেনি। তারা নিজেদের লোক নিয়ে দল গঠন করেছে, এবং সামনেও করবে। এখন তারা যখন আমাদের বাদ দিতে চায়, দেখি আমাদের ছাড়া কতদূর যায়।’
সারাবাংলা/এআইএন/পিটিএম