আয়নাঘর কী তা নিজে দেখে এসেছি: জামায়াতে আমির
২ মার্চ ২০২৫ ১৯:৩৮ | আপডেট: ২ মার্চ ২০২৫ ২১:৫৪
ঢাকা: ‘আয়নাঘর কী তা নিজে দেখে এসেছি। আমার সঙ্গে আরও অনেক ওলামায়ে একরাম সেই আয়নাঘর দেখে আসছেন। ওই আয়নাঘরে কত আলেম-ওলামা গুম অবস্থায় ছিলেন তা পরিবারের কেউ জানত না। এমনকি আয়নাঘরে থাকা ব্যক্তিটাও জানত যে, তিনি কোথায় আছেন।’- এভাবেই বলছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. শফিকুর রহমান।
রোববার (২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে প্রিন্স বাজার রেস্টুরেন্টে এতিম, আলেম-ওলামাদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতে আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘সবশেষ গ্রেফতার হয়েছিলাম ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ৩টায়। সিটিটিসির অফিসাররা আমাকে তাদের আয়নাঘরে রেখেছিল। শীতের রাতে আমাকে এক কাপড়ে তুলে নিয়ে যায় তারা। সেখানে বহু ওলামা একরামকে দেখেছি। তাদের কেউ ১৪ মাস, কেউ আট মাস, কেউ একমাস ধরে সেই আয়নাঘরে ছিল।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন পর আমাকে কোর্টে নেওয়া হলো, তবে আদালতে তোলা হলো না। আদালতের হাজতখানা থেকে কেরাণীগঞ্জ কারাগারে নেওয়া হলো। এমন এক গাড়িতে নেওয়া হলো, যেন কোনো দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীকে নেওয়া হচ্ছে। র্যাব, পুলিশ, সোয়াত, ডিবির স্কটে কেরাণীগঞ্জ নেওয়া হলো। সেখান থেকে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হলো। আমার সঙ্গে ৩০ জনের মতো আলেম ওলামা ছিলেন। হাতে হ্যান্ডকাপ, পায়ে ডান্ডা বেরি পরিয়ে জেলে নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেলে খালি হাতে ঢুকলেও আমার জন্য একজন আলেম সবকিছু নিয়ে এসেছেন। ওই ব্যক্তিকেও ডান্ডাবেরি দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। অথচ তার দোষ ছিল তিনি দ্বীনের খেদমত করতেন।’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ কুরআনের মাধ্যমে সবকিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু মানুষ নিজেরাই আল্লাহর নির্দেশনা অমান্য করে দূরে সরে গেছে। আল্লাহ তায়ালা সকল মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। অমুসলিমরাও আশরাফুল মাখলুকাত। সমাজে একইসঙ্গে সমান সুযোগ নিয়ে বসবাস করার অধিকার সবার রয়েছে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরের ভয়াবহ দুঃশাসনের পর এদেশের সর্বস্তরের মানুষ, ওলামায়ে একরাম, কৃষক, শ্রমিক জনতা সকলের আন্দোলনের ফলে, অনেক প্রাণের বিনিময়ে গত ৫ আগস্ট একটি পরিবর্তন এসেছে। এখানে মেহনত করলে অবশ্যই একটি পরিবর্তন আসবে। যে পরিবর্তনের ফলে একটি সমাজে সবাই মিলেমিশে বসবাস করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। যেখানে মানুষ মানুষকে ভালবাসবে এবং সম্মান করবে।’
এর আগে ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মো. সেলিম উদ্দিন ইফতারে উপস্থিত এতিম আলেম ওলামাদের উদ্দেশে কথা বলেন। তার আগে এতিম-ওলামাদের পক্ষ থেকেও বক্তব্য দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম