খাতুনগঞ্জে গিয়ে মেয়র-জেলা প্রশাসকও পেলেন না সয়াবিন তেলের বোতল
৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:০৫ | আপডেট: ৩ মার্চ ২০২৫ ১৬:১৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীর বৃহত্তম পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে পরিদর্শনে গিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিদর্শনে গিয়ে তারা বাজারে দেখলেন, ‘ভোজ্যতেল উধাও’।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের অভিযোগ, বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও হওয়ার পেছনে ব্যবসায়ীদের হাত আছে। ব্যবসায়ীরা তেল সরিয়ে রেখেছেন। এজন্য মঙ্গলবার (৪ মার্চ) তেলের উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ীদের বৈঠকে ডেকেছেন তারা দুজন।
সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে খাতুনগঞ্জ বাজারে পরিদর্শনে যান তারা।
পরিদর্শন শেষে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাধারণ মানুষ বেশ কয়েকদিন ধরেই অভিযোগ করছিল, বোতলজাত ভোজ্যতেল বাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে এবং যেগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১৮০ টাকা, ২০০ টাকার উপরে চলে গেছে। সে কারণে আজ আমরা এখানে এসেছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভোজ্যতেল মোটেও পাওয়া যাচ্ছে না।’
‘দুয়েকটা জায়গায় যে তেলগুলো দেখেছি ল্যাব টেস্টের জন্য অলরেডি নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা আছেন। পরীক্ষা করে দেখব, আদৌ এগুলো ভোজ্য তেলের মত কি না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি রমজান মাসে নিত্যপণ্যর মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা উচিত। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের বাইরে যে ধর্মীয় রাষ্ট্রগুলো আছে প্রত্যেকটি জায়গায় ভর্তুকি দিয়ে পণ্য বিক্রি করা হয়। তারা এটাকে সওয়াব হিসেবে ধরে নেয়। কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেখানে রোজা এলে কেন জানি ব্যবসায়ীরা আরো অস্থির হয়ে যায়।’
‘রোজার মাসে যাতে পুরা বছরের ইনকাম করার জন্য তারা পাগল হয়ে যায়। আমরা এটা মনিটরিং করছি। এ মনিটরিং শুধু আজ থেমে থাকবে না। আরও হবে। আমরা আগামীকাল (মঙ্গলবার) তেলের ব্যবসায়ী যারা আছে, উৎপাদনকারী ও আমদানিকারক সবার সঙ্গে বসব। আমরা বসে তারা যাতে অনতিবিলম্বে তেল বাজারজাত করে দাম কমিয়ে আনে এ ব্যাপারে অ্যাকশন প্ল্যান নেব।’
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বলা হয়েছে তেল গত বছরের চেয়েও বেশি আমদানি হয়েছে তবুও বাজারে না থাকার কারণ কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শাহাদাত বলেন, ‘আমাদের দেশ একমাত্র দেশ যেখানে ব্যবসায়ীরা চায় রাতারাতি ধনী হয়ে যেতে। আমরা আগামীকাল তাদের সঙ্গে বসব। আমরা আজ পরিদর্শনে এসেছি যাতে তাদের কথাগুলো বলতে পারি। সরেজমিনে এসে কিন্তু আমরা কোথাও তেল পাইনি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি তারা তেলগুলো কোথাও সরিয়ে রেখেছে। কোথায় সরিয়ে রেখেছে তার তথ্য কিন্তু ইন্টেলিজেন্স আমাদের দিচ্ছে। এটা না যে, আমরা জানি না। স্পষ্টভাবে তাদের বলতে চাই, এগুলো আমরা জানি কোথায় তেল তারা রেখেছে। এবং সেটা যদি প্র্যাকটিক্যালি গিয়ে ধরা পড়ে তাহলে কিন্তু আইন আইনের গতিতে চলবে।’
উৎপাদক পর্যায়ে অভিযান না করে সুফল পাওয়া যাবে কি না? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, “আমরা তেলের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আগামীকাল বসব। বসার পরও যদি দেখি বাজারে তেল সহনীয় পর্যায়ে নেই তাহলে আমরা অ্যাকশনে যাব। মধ্যসত্ত্বভোগীরা যাতে বাজারে তেল সংকট করতে না পারে, সেজন্য সিটি করপোরেশনে সঙ্গে আমরা বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান চালাব। আমরা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে সকল পণ্যসামগ্রী রাখতে চাই।’
সারাবাংলা/আইসি/এসআই