Thursday 06 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদে সিরিয়াল ভাঙলে লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল হবে: নৌ উপদেষ্টা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩৫ | আপডেট: ৬ মার্চ ২০২৫ ১৫:২১

ঢাকা: নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ঈদের সময় সদরঘাটে সিরিয়াল ভেঙে যাত্রী পরিবহণ করলে প্রয়োজনে লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌ পথে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নৌ চলাচল ও যাত্রীদের নিরাপদ ভ্রমণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক সভা শেষে উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

উপদেষ্টা বলেন, ‘ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নৌ চলাচলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সিদ্ধান্তগুলো ১৫ রমজান থেকে বাস্তবায়ন করা শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি উন্মুক্ত রাখতে হবে। বাস যাত্রাপথে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করতে পারবে না। আমি পুলিশকে অনুরোধ করেছি, তারা তিনটি জায়গায় র‍্যাকার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। প্রয়োজন হলে বাস উঠিয়ে নিয়ে যাবেন।’

গোলাপ শাহ মাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এমন একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা হয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘কেউ ৩টার সময় রওনা হলেও ৭টার লঞ্চ ধরতে পারেন না। একটা সভ্য দেশ, সভ্য শহরে এটা হয় না।’

এ সময় আরও বলেন, ‘নৌ পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও ধারণক্ষমতার বাইরে যাত্রী বহনের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ী ব্যক্তিদের শুধু জরিমানাই করা হবে না অধিকন্তু ঐ লঞ্চের রুট পারমিটও বাতিল করা হবে।’

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রত্যেক লঞ্চের নির্ধারিত স্থানে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ভাড়ার রেট চার্ট প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রায়শই অভিযোগ শোনা যায় ঈদের সময় যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে প্রায় দেড়/দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। আসন্ন ঈদে এ ধরনের অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটে যাদের ইজারা দেয়া হয়েছে তারা যাত্রীদেরকে কোনোরূপ হয়রানি করতে পারবেন না। কোনো অতিরিক্ত চার্জ আদায় করতে পারবে না। বিআইডব্লিউটিএসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে তদারকি করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

এ সময় উপদেষ্টা যে-সকল জলযানের ফিটনেস নেই তাদেরকে অবিলম্বে ফিটনেস সনদ গ্রহণের আহ্বান জানান।

নৌ যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে রাতে চলাচলকারী লঞ্চে আনসার সদস্য নিযুক্ত করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘রাতে চলাচলকারী দূরপাল্লাগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চারজন করে আনসার সদস্য নিয়োগের জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে কোনো দুর্ঘটনা সংগঠিত হলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবে। আনসার সদস্যদেরকেও তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। লঞ্চে বা ফেরিঘাটে কর্মরত স্টাফদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং আইডি কার্ড থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, বরিশালের মেঘনা নদীসহ যে সকল অপরাধপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে।’

১৫ রমজান হতে ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্মুক্ত রাখতে হবে বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো ভাবেই রাস্তার ওপরে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনী বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে। প্রয়োজনে রেকার দিয়ে অভিযুক্ত বাসগুলোকে সড়িয়ে দিতে হবে।’

ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে উপদেষ্টা সদরঘাটসহ নৌ রুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন বলে সাংবাদিকদের অবহিত করেন

সদরঘাটে লঞ্চের কোনো সিরিয়াল ব্রেক করা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি শুধু মুখে মুখে বলছি না, এখানে মালিক সমিতির লোকজন আছেন, তাদের সামনে বলা হয়েছে। সিরিয়াল ভাঙলে ওই লঞ্চের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে। দরকার হলে তার লাইসেন্স সাসপেন্ড করবো। সে যেই হোক, তার যতই ক্ষমতা থাকুক। সরকারের আইনের চেয়ে বড় ক্ষমতাধর আর কিছু নেই দুনিয়াতে।’

এ সময় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ও লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/জেআর/এমপি

উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন নৌ উপদেষ্টা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর