ঢাকা: তরঙ্গের দাম কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
রোববার (৯ মার্চ) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘প্রান্তিক পর্যায়ে দ্রুতগতির মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মুস্তাফা মাহমুদ হোসাইন।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে তরঙ্গের দাম বেশি। তরঙ্গের দামের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনও শীর্ষে। আমি আগেও আমার অনেক লেখায় তরঙ্গের দাম বেশি থাকার কথা উল্লেখ করেছি। তরঙ্গের দাম কিভাবে কমানো যায় আমি তার ব্যবস্থা নেবো। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় রয়েছে। কোনো কিছুর দাম কমাতে চাইলে অর্থমন্ত্রণালয় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তরঙ্গের দাম কমলে রাজস্ব কিছুটা কমবে। এক্ষেত্রে তরঙ্গের দাম কমালেও ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ার কারণে দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে। এতে রাজস্বের সেই ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। বিষয়টি আপনাদেরকেই (এমএনও) এনবিআর-কে বোঝাতে হবে।’

আলোচনা সভায় অতিথিরা
দেশের মোবাইল অপারেটরদের উদ্দেশ্যে ফয়েজ আহমদ বলেন, ‘একসঙ্গে টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি ব্যবহার করলে খরচ বাড়ে। তাই টু-জি ও থ্রি-জি দ্রুত বন্ধ করা উচিত। আপনারা কিভাবে ফাইভ-জি’তে যাবেন সেই পরিকল্পনা করেন।’
তথ্য প্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতে আগামী সপ্তাহ থেকেই নতুন নতুন আদেশ জারি হবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, ‘আগামী সপ্তাহ থেকে নতুন আদেশ আসবে। প্রথমেই আমরা নির্বাহী আদেশ দেবো না। তবে আপনারা পলিসিতে (নীতি প্রণয়ন) হস্তক্ষেপ করলে কিংবা আমলাতন্ত্রকে উৎসাহিত করলে নির্বাহী আদেশ জারি করবো। ডিটিএইচ সেবা আকাশ’র বাইরে নতুন লাইসেন্স দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।’
লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন পলিসি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘স্বৈরাচারি কালাকানুন বা পলিসি রেজিম বাতিল করে রিফর্ম করা হবে। যাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং এর অভিযোগ আছে তাদের ইন্টারন্যাশনাল লাইসেন্স দেওয়া হবে না। তবে তারা দেশে আইন মেনে ব্যবসা করতে পারবে। বিগত ১৫ বছরে যারা বঞ্চিত হয়েছে নতুন লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার পাবেন।’
একইসঙ্গে দেশের ব্রডব্যান্ড ও মোবাইল ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সেবার মান বাড়ানোর পরামর্শ দেন প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ। স্টারলিংকের সঙ্গে টিকে থাকতে হলে সবাইকেই সেবার মান বাড়াতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিজেদের স্বার্থেই ইন্টারনেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার সেবার মান বাড়াতে হবে এবং দাম কমাতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইমাদুর রহমান, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মাহতাব উদ্দিন, আইআইজিবি’র সভাপতি আমিনুল হাকিম, বিডি জবস এর সিইও ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, বেসিস’র অ্যাসোসিয়েট কমিটির সভাপতি রাফেল কবির, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসির, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিনিয়র ডিরেক্টর করপোট অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত প্রমুখ।