Sunday 18 May 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০ মার্চ ১৯৭১
বিদ্রোহ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫ ০২:৩৬

১০ মার্চ ১৯৭১। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে সারাদেশে সরকারি ও আধাসরকারি অফিসের কর্মচারীরা দশম দিনের মতো কাজে যোগদানে বিরত থাকেন। বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও ব্যবসা কেন্দ্র খোলা থাকে। ঘরে ঘরে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত স্বাধীন বাংলার পতাকা ওড়ে। সরকারি ও বেসরকারি ভবন, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে কালো পতাকা ওড়ে। এমনকি রাজারবাগ পুলিশ লাইন, থানা ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও কলো পতাকা উত্তোলিত হয়।

বিজ্ঞাপন

বিক্ষুব্ধ বাঙালির ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছিল টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত। দেশজুড়ে শেখ মুজিবের ডাকা অসহযোগ আন্দোলন চলছিল তখন। বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসের দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারীরা তার নির্দেশ মেনে চলার সিদ্ধান্ত নেয় এইদিনে।

১১ মার্চে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ১০ মার্চের প্রধান খবরগুলো প্রকাশ করা হয়। নতুন করে কারা প্রতিরোধে শামিল হলো সেটাও উল্লেখ ছিল খবরে। সংবাদে বলা হয়, ‘স্বাধীন বাংলাদেশ সংগ্রাম পরিষদের যুক্তবিবৃতিতে বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক নাগরিককে স্বাধীনতা সংগ্রামে নিয়োজিত প্রতিটি মুক্তিসেনাকে সকল প্রকার সাহায্য করার অনুরোধ জানানো হয়। পাকিস্তান থেকে বাঙালিদের আসতে না দিলে বিমানবন্দরে চেকপোস্ট বসিয়ে অবাঙালিদের দেশত্যাগ করতে না দেওয়ার হুমকি নিয়েও সংবাদ প্রকাশিত হয়।’

একাত্তরের এদিন সকালে শেখ মুজিবুর রহমান তার নিজ বাসভবনে বিদেশি একদল সাংবাদিকের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। তিনি বলেন, সাত কোটি বাঙালি আজ নিজেদের অধিকার সম্পর্কে অত্যন্ত সচেতন। যেকোনো মূল্যে তারা অধিকার আদায়ে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। এ পর্যন্ত বাঙালিরা অনেক রক্ত দিয়েছে। এবার আমরা এই রক্ত দেওয়ার পালা শেষ করতে চাই।

ঢাকায় এইদিন শেখ মুজিব এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের নামে আমি যে নির্দেশ দিয়েছি সচিবালয়সহ সরকারি ও আধা-সরকারি অফিস আদালত, রেলওয়ে ও বন্দরগুলোতে তা পালিত হচ্ছে। ক্ষমতাসীন চক্র প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোবৃত্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তে লিপ্ত।’

লেখক-শিল্পী মুক্তি সংগ্রাম পরিষদের ব্যানারে বাংলার লেখক ও শিল্পীরা মিলিত হন। রাজধানীতে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এদিকে নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালি ছাত্ররা জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ দাবি করে মহাসচিবের কাছে স্মারকলিপি দেন।

বিজ্ঞাপন

সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হল প্রাঙ্গণে তৎকালীন ছাত্রলীগের উদ্যোগে কর্মীসভা হয়। কর্মীসভায় ছাত্রলীগ ও ডাকসু নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের এক বিবৃতিতে বাঙালি সৈন্য, ইপিআর ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি পাকিস্তানি উপনিবেশবাদী সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করার আবেদন জানানো হয়।

করাচিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে ন্যাপ প্রধান ওয়ালী খান জানান, তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য ১৩ মার্চ ঢাকায় আসবেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘ক্ষমতা যাতে হস্তান্তর করা যায় সেজন্য আগে আমাদের শাসনতন্ত্র প্রণয়নের চেষ্টা করতে হবে।’

সারাবাংলা/এফএন/পিটিএম

১০ মার্চ ১৯৭১ বিক্ষোভ বিদ্রোহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর