দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে: তারেক রহমান
১১ মার্চ ২০২৫ ২১:২৭ | আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ২২:০৪
ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে না পারলে দেশের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে গুলশান শুটিং ক্লাবে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) আয়োজিত ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে দুঃখ-কষ্টে আছে অধিকাংশ মানুষ। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো কেন ডিভেট করছি না যে জনগণের রায় আমার পক্ষে আসলে আমি কীভাবে এই ব্যবস্থা হ্যান্ডেল করব, কীভাবে ডিল করব। আমি কীভাবে নিত্যপ্রয়োজনয়ীয় দ্রব্য মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে রাখব, কীভাবে বাজার ব্যবস্থা সাজাব, কীভাবে উৎপাদন বাড়াব।’
‘আমি মনে করি, এসব বিষয় অবশ্যই জাতির সামনে এডড্রেস করা উচিত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা, সাংবিধানিক ব্যবস্থা, ভোটের ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা যেমন আলোচনা করা উচিত, তার থেকে বেশি আলোচনা হওয়া উচিত কীভাবে মানুষের সমস্যা সমাধান কোন দল কীভাবে করবে’— বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমরা একজন আরেকজনের সমালোচনা অবশ্যই করব। কিন্তু, সমালোচনা করতে গিয়ে এমন পরিস্থিতিতে যেন না দাঁড়াই যেখানে জনগণের ইস্যুগুলোকে এডড্রেস করতে ভুলে যাব। আমাদের কাছে অন্য কিছু মুখ্য হয়ে যাবে, এগুলো গৌণ হয়ে যাবে। এটি যদি হয়, তাহলে এ দেশের সম্ভাবনা সব শেষ যাবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হলে অবশ্যই আমাদের কৃষি উৎপাদন বাড়াতে হবে। কৃষি উপাদন কীভাবে বৃদ্ধি করব? জিয়াউর রহমান শুধুমাত্র খাল খননের মাধ্যমে কৃষি জমিতে উপাদন বাড়িয়েছিলেন। যে জমিতে এক ফসল হতো সেখানে দুই-তিন ফসল হয়েছে সঠিক সময়ে পানি সরবারহ করার মাধ্যমে। খাল খননের মাধ্যমে বন্যাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছিল।’
তারেক রহমান বলেন, ‘মানুষের একটি প্রাইমারি প্রয়োজন হচ্ছে মিনিমাম চিকিৎসা ব্যবস্থা। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো কীভাবে আমাদের দেশের মানুষের নূন্যতম চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করব সে বিষয়গুলো কেন তুলে ধরছি না। সেটি কি সংস্কার নয়? আমি যে বাজার ব্যবস্থা ও উৎপাদন ব্যবস্থার কথা বলেছি সেটি কি সংস্কার নয়?’
‘শুধু একজন ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধান মন্ত্রী হবেন না— এটি কি সংস্কার? শুধুমাত্র নির্বাচনের সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা করতে হবে— এটিই কি শুধু সংস্কার? জনগণের সমস্যাগুলো সমাধান করা কি সংস্কার না? একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি এগুলো সংস্কার প্রয়োজন। আমাদের ডাইরেশন থাকতে হবে, আমাদের প্ল্যান থাকতে হবে এবং সেগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে’— বলেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার আরও হতে পারে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা যদি সঠিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারি তাহলে কী করে আমাদের পক্ষে সম্ভব এ দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, কী করে সম্ভব একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা।’
তারেক রহমান বলেন, ‘পরিবেশ দূষণ কীভাবে কমাতে পারি? আমি মনে করি পরিবেশ বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, শব্দ দূষণ বলেন, ধোঁয়া দূষণ বলেন এসব দূষণের কারণে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। এই দূষণ থেকে রাজধানীসহ গোটা দেশকে কীভাবে রক্ষা করতে পারি, এ ব্যাপারে নিজ নিজ পরিকল্পনা জাতির সামনে সব রাজনৈতিক দলের উপস্থাপন করা উচিত।’
ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এইচআই
জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন তারেক রহমান বিএনপি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান