আস্থা ভোটে হেরে গেল পর্তুগালের ক্ষমতাসীন দল
১২ মার্চ ২০২৫ ২৩:০৩
পর্তুগাল: পর্তুগালের জাতীয় সংসদে আস্থা ভোটে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো সরকারের পতন হয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো (পিএসডি) সরকারের আস্থা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে দেশটির অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। ফলে বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে প্রেসিডেন্ট সংবিধান অনুযায়ী নতুন নির্বাচন তারিখ ঘোষণা করতে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রোর বিরুদ্ধে পারিবারিক ব্যবসা থেকে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সুবিধা গ্রহণের অভিযোগ এনেছে সংসদের বিভিন্ন দল। দুটি দলের ডাকা অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধান বিরোধী দল সরকারকে সমর্থন করলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে যথাযথ ব্যাখ্যা না পাওয়ার অভিযোগে সরকারের ডাকা আস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় দলটি।
প্রায় চার ঘণ্টা ধরে চলে সংসদে যুক্তিতর্ক। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের যুক্তি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো বিতর্কের প্রথমে তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এ সময় তিনি সরকারের কাজগুলো তুলে ধরেন। যেহেতু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে লুইস মন্টিনিগ্রো কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানির ওপর নির্ভর করে, তাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যেম ‘তার পেশাদার কার্যকলাপ রাজনৈতিক কার্যকলাপকে প্রভাবিত করেনি।’
বক্তৃতায় লুইস মন্টিনিগ্রো ১১ মাসের ম্যান্ডেটের সময়, সরকারকে অসম্মান করার চেষ্টার সময় পার্টিডো সোশ্যালিস্টার (পিএস) পাশে থাকার জন্য চেগাকে আক্রমণ করেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন যে ‘পর্তুগাল থামতে পারে না’ এবং বর্তমানে ‘স্থিতিশীল দেশ’ হিসেবে থাকতে পারে না। তা সত্ত্বেও, লুইস মন্টিনিগ্রোর ভাষণ সংসদের পক্ষে ১০ মার্চ নির্বাচিত সরকারের কাজের ধারাবাহিকতা মেনে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
বিতর্কের শেষে মোকাও দে কনফিয়ানসার ভোটগ্রহণের ঠিক আগে ডেপুটি পাওলো নুনসিও (সিডিএস-পিপি) প্রজাতন্ত্রের পরিষদের সভাপতি হোসে আগুয়ার ব্রাঙ্কোকে কাজ বন্ধ করতে বলেন। যেমনটি আগের বিতর্কের সময় হুগো সোয়ারেস (পিএসডি) অনুরোধ করেছিলেন। কথোপকথনের পর জোসে আগুয়ার ব্রাঙ্কো উল্লেখ করেন যে, ‘আইনত, ভোটগ্রহণের ঠিক আগে বাধা দেওয়ার অনুরোধ করা যেতে পারে।’
এদিকে সরকার পতনের ফলে পাবলিক সেক্টরে কাজের ধীরগতি নেমে আসবে। এর মাধ্যমে পর্তুগালে বসবাসকারী অভিবাসীরা তাদের বসবাস অনুমতি পাওয়ার ক্ষেত্রেও দীর্ঘসূত্রিতা আরও দীর্ঘ হবে। তাছাড়া অভিবাসনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে রাজনৈতিক সমাধান পেতে অপেক্ষা করতে হবে জটিলতায় পড়াও অভিবাসীদের। অপরদিকে পর্তুগিজরাও রাজনৈতিক এই অস্থিতিশীলতায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
পরবর্তী করণীয় হিসেবে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি নতুন সরকার গঠন করতে পারেন। অথবা নতুন নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন। জানা গেছে, বুধবার থেকে রাষ্ট্রপতি দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। যদিও এর আগে রাষ্ট্রপতি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সরকার পতন হলে ১১ থেকে ১৮ মে নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করবেন।
সারাবাংলা/পিটিএম