১৩ মার্চ ১৯৭১
রাজবন্দীদের মুক্তির লক্ষ্যে ‘জেল ভাঙ্গা’ আন্দোলনের ডাক দেন ভাসানী
১৩ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ০২:৪২
ঢাকা: ১৯৭১ এর ১৩ মার্চ। সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে ছিল উত্তাল পূর্ব বাংলা। প্রতিদিনের মতো এদিনও ঢাকাসহ সর্বত্র বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের মিছিল সমাবেশে ছিল মুখরিত। সেইসঙ্গে প্রতিটি গ্রাম, শহর, বন্দর, নগরে চলতে থাকে তীব্র অসহযোগ আন্দোলন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছিল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ।
অসহযোগ আন্দোলনের কারণে দেশ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষক, শ্রমিক, চাকরিজীবী, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, শিক্ষক সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। লাখো মুক্তিকামী বাঙালির উত্তাল আন্দোলন-সংগ্রাম ও সশস্ত্র প্রস্তুতিতে শঙ্কিত হয়ে পড়ে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা।
মওলানা ভাসানী রাজবন্দীদের মুক্ত করার জন্য ‘জেল ভাঙ্গা’ নামে এক আন্দোলনের ডাক দেন। ইয়াহিয়া লাহোরে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান করেন। কিন্তু ঢাকায় বৈঠক হলে তাতে যোগ দেবেন বলে শেখ মুজিব সম্মতি দেন।
এদিকে সামরিক কর্তৃপক্ষের ১১৫ নম্বর ‘মার্শাল ল’ আদেশ জারি হয়। সকল বেসামরিক কর্মচারী যাদের প্রতিরক্ষা খাত থেকে বেতন দেওয়া হয় তাদের ১৫ মার্চ সকালে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যথায় চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকিও দেওয়অ হয়। এ ধরনের নির্দেশকে উসকানিমূলক বলে অভিহিত করেন শেখ মুজিবুর রহমান।
অন্যদিকে পশ্চিম জার্মানির ৬০ জন, জাতিসংঘের ৪৫ জন, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্সের ৪০ জনসহ মোট ২৬৫ বিদেশিকে ঢাকা থেকে অপসারণ করা হয়।
পাকিস্তানি সামরিক শাসকরা বাংলার দামাল ছেলেদের এই আন্দোলন দেখে চিন্তিত হয়ে পড়ে। পাক স্বৈরাচাররা পূর্ব পাকিস্তানের বাস্তব অবস্থা উপলব্ধি করতে পারে। তারা চারদিকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে পাকিস্তানের বড় নেতারাও শঙ্কিত হয়ে পড়েন।
একই দিনে জমিয়াতুল ওলেমা ইসলামিয়া সংসদীয় দলের নেতা মাওলানা মুফতি মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভা থেকে তিনটি আহ্বান জানানো হয়। আহ্বানগুলো হলো: ১. পূর্ব পাকিস্তান থেকে সামরিক আইন প্রত্যাহার, ২. ২৫ মার্চের আগে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং ৩. সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সারাবাংলা/এফএন/পিটিএম
১৩ মার্চ ১৯৭১ জেল ভাঙ্গা ন্যাপ মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী