ঢাকা: ধর্ষক, নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী ও বাংলাদেশ সরকারের প্ল্যানিং কমিশনের সাবেক ডিভিশন চিফ মমতাজ মান্নান। উপযুক্ত শাস্তি হলে আর কেউ ধর্ষণ বা নারী নির্যাতন করার সাহস পাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নারী অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। মাগুরায় ধর্ষণের শিকার সেই শিশুসহ দেশব্যাপী নারী ও শিশু নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং দায়ীদের শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মমতাজ মান্নান বলেন, বহুভাবে বহুদিন ধরে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতন চলছে। বিচারহীনতা, বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা, অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারায় এ ধরনের ঘৃণ্য কাজ বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, মাগুরার সেই শিশুর সঙ্গে করা অপরাধের বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করে অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করবেন, আমরা এই আবেদন জানাচ্ছি।
এ সময় নারী নেত্রী নাজমুন্নাহার বলেন, বিগত ১৭ বছরে রাস্তায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, গণপরিবহনে, স্কুলে ও কলেজে এবং চাকরিক্ষেত্রে অসংখ্য নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। আমরা সেগুলোর বিচার পাইনি। এমনকি বিচার চাইতেও পারিনি।
তিনি বলেন, নতুন স্বাধীনতার পরে বিচার চাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ এই ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক।
প্রত্যেক নারীর বিচার পাওয়ার অধিকার আছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত লেখিকা নুরুন্নাহার খানম বলেন, আগে এসিড ছোড়ার সংস্কৃতি ছিল। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার পরে এসিড নিক্ষেপ যেমন কমেছে, তেমনি আমরা আশা করব, ধর্ষকদের, নারী-শিশু নির্যাতনকারীদের জনসম্মুখে শাস্তি প্রদান করা হবে। তাহলে ধর্ষণ ও নির্যাতন করার সাহস কেউ পাবে না।
অধ্যাপক আফিফা মুশতারী বলেন, ধর্ষণের মতো একটি জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদ জানাতে আজ এখানে নারী অধিকার আন্দোলনের পক্ষ থেকে দাঁড়িয়েছি আমরা। যে অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা দেখিনি। যার জন্য এইটা এতো বেড়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত এখানে এসে ঠেকেছে। আমরা এই কাজের ধিক্কার জানাই।
এ সময় নারী ও শিশুদের জন্য একটি সুস্থ্ ও নিরাপদ ভুবন গড়ে তুলতে নারী অধিকার আন্দোলন ছয়টি দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো: নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে বিদ্যমান আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা; দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে যথা সময়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা; বিশেষ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করা; শরিয়াহ আইনের মাধ্যমে ধর্ষণের বিচার করা; নারী ও শিশুর প্রতি পাশবিক অত্যাচার দমনে কঠোর দণ্ডবিধি প্রয়োগ করা এবং দণ্ড প্রকাশ্যে কার্যকর করা।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. তাহেরা বেগম, ড. শারমিন ইসলাম, সৈয়দা শাহীন আকতার, ড. সাজেদা হুমাইরাসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা।