Thursday 13 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুঁজিবাজারে সক্রিয় হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক মিউচ্যুয়াল ফান্ড

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৪০ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৯:৩২

ঢাকা: টানা দরপতনের পর চলতি সপ্তাহে দেশের পুঁজিবাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। টানা তিন কার্যদিবস ধরে বাজারের প্রধান সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকার পাশাপাশি লেনদেনেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। দৈনিক লেনদেন গড়ে ৪০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।

বাজার বিশ্লেষক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মতে, এই উত্থানের কারণ হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান। সম্প্রতি বিধি-নিষেধ উঠে যাওয়ায় রেইস ম্যানেজমেন্ট এর ১৩টি ফান্ড বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বেশ কিছু মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিনের নিস্ক্রিয়তা কাটিয়ে বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। তারা বিশেষ করে বৃহৎ মূলধনী মৌলভিত্তিক কিছু শেয়ারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে, যার ফলে বাজারে নতুন করে ক্রয় চাপ তৈরি হচ্ছে।

এ বিষয়ে গ্লোব সিকিউরিটিজের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা শামীম রেজা বলেন, “বড় কোম্পানির শেয়ারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক ও রেনাটার মতো শেয়ারে স্থিতিশীল ক্রয় চাপ দেখা যাচ্ছে। গ্রামীণফোন সম্প্রতি ডিভিডেন্ডের রেকর্ড তারিখ ঘোষণা করেছে, যার ফলে খুচরা বিনিয়োগকারীরা বিক্রির দিকে ঝুঁকছে। সাধারণত এমন পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমে যায়, তবে আমরা প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তা লক্ষ্য করছি, যা বাজারের জন্য ইতিবাচক।”

তিনি বলেন, এ ব্যাপারে “বাজারের অন্যতম প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী রেইস ম্যানেজমেন্টের মিউচ্যুয়াল ফান্ড দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিল। সম্প্রতি জানতে পেরেছি যে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের পর এই ফান্ডগুলোর ট্রেডিং কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। ব্রোকার কমিউনিটিতে গুঞ্জন রয়েছে যে, সম্প্রতি রেইস ম্যানেজমেন্ট বাজারে সক্রিয় হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত।”

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে রেইস ম্যানেজমেন্টের হেড অব কমপ্ল্যায়েন্স এন্ড মামুনুর রশিদ বলেন, “বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আমাদের ফান্ডগুলোর বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেছে, যার ফলে আমরা পুনরায় অপারেশন শুরু করেছি। রেস ম্যানেজমেন্ট দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ফান্ড ম্যানেজমেন্ট করছে এবং এক লাখের বেশি বিনিয়োগকারীদের প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আমাদের ফান্ডের ১০০ ভাগ সম্পদ নিরপেক্ষ হেফাজতকারীর কাছে সুরক্ষিত রয়েছে। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে বাজারে বিনিয়োগ বাড়ানো সম্ভব হবে এবং আগামী দিন গুলোতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো রিটার্ন নিশ্চিত করা যাবে।”

মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে এসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিস অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডস (এএএমসিএমএফ)-এর হেড অফ রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স ড. মাজহারুল ইসলাম বলেন, “শিবলি রুবাইয়াতের সময়ে ২০২৩ সাল থেকে মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইন্ডাস্ট্রিকে বিভিন্ন ইনসপেকশন ও ইনকোয়ারির বেড়াজালে ফেলা হয়েছে, যার ফলে প্রায় ৭০ শতাংশ ফান্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এতে বাজারের স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হয় এবং বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে আমরা এই জটিলতা নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি।”

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকলে বাজার আরও স্থিতিশীল হতে পারে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।

সারাবাংলা/জিএস/আরএস

পুঁজিবাজার মিউচ্যুয়াল ফান্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর