উত্ত্যক্ত করায় চিরকুট লিখে কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’
১৫ মার্চ ২০২৫ ১৩:৩৫
পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে চিরকুট লিখে এক শিক্ষার্থী (১৬) আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকেলে উপজেলার শৌলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রীর পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার পূর্বকালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল ওই শিক্ষার্থী। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে বিভিন্ন সময় তাকে উত্ত্যক্ত করতেন একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলাম তাওসিন (১৭)। বিষয়টি তওসিনের পরিবার ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায় ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার। তবে কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে তাহসিন। ওই ছাত্রীর আরেক সহপাঠির সঙ্গে তোলা ছবিতে বাজে মন্তব্য লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে তাহসিন। বিষয়টি জানার পর চিরকুট লিখে নিজ কক্ষের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ওই ছাত্রী।

কিশোরীর মৃত্যুতে স্বজনদের আহাজারি।
চিরকুটে লেখা ছিল- ‘আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছুই করিনি। আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য আর ওর পরিবারের জন্য, আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ-শান্তি চলে…
চিরকুটে পানি লেগে ছিল। লেখা শেষ না করেই আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী।
নিহত ছাত্রীর মা কুলসুম বলেন, আমার মেয়ে অত্যন্ত ভদ্র ও লাজুক। তাকে বিভিন্ন সময় বখাটে তাহসিন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। বিষয়টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ওই বখাটের চাচাকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শুক্রবার আমার মেয়ের সঙ্গে তার এক সহপাঠির তোলা স্বাভাবিক ছবিতে বাজে মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় ওই বখাটে। এতে লোকলজ্জার ভয়ে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করে।’
নিহত ছাত্রীর বাবা নজরুল ইসলাম খান বলেন, আত্মহত্যার আগে আমার মেয়ে চিরকুটে লিখে গেছে। চিরকুটে আত্মহত্যার জন্য ওই ছেলেকে দায়ী করে গেছে। আমার মেয়েকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছেন তাওসিন। আমরা ওই বখাটের ফাঁসি চাই।’
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসলেও আমাকে জানানো হয় ঘটনার একদিন আগে। জানার পরে আমি তাহসিন ও তার পরিবারের লোকজনকে ডেকে এনে সাবধান করে দিয়েছি।’
এ ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত তাহসিন ও তার পরিবারের কারো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে চলে গেছেন।
বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, প্রথমে বিষয়টি পুলিশকে জানায়নি নিহত ছাত্রীর পরিবার। পরে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
সারাবাংলা/এমপি