ঢাকা: বরিশালের বোরহানউদ্দিন থানার এসআই রাজিব হোসেনের বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ ও হয়রানির অভিযোগ তুলে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ইসমেতারা বেগম নামের একজন নারী। একই সঙ্গে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার হস্তক্ষেপও কামনা করেন তিনি।
শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংঘটিত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এর ন্যায় বিচার দাবি করেন ইসমেতারা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪ সালের মার্চে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত একটি অভিযোগ জানাতে বোরহানউদ্দিন থানায় গেলে এসআই মো. রাজিব হোসেন তদন্তের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি তদন্তের নামে প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করে তাকে বিশ্বাস স্থাপনে বাধ্য করেন এবং জমি উদ্ধারের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও প্রলোভন দেখিয়ে সুচতুর কৌশলে ঘনিষ্ঠ হওয়ার অপচেষ্টা চালান। তিনি সরকারি পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে, পরিকল্পিতভাবে প্রতারণা উদ্দেশ্যে ও প্রলোভনের মাধ্যমে আমাকে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণ এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বছর ২৩ এপ্রিল বরিশালে এয়ার কুলার কেনার নাম করে এসআই রাজিব আমাকে সহায়তার আশ্বাস দেন এবং কৌশলে বরিশালে আমার সঙ্গে যান। বরিশালের সদর রোডে ‘হোটেল আলী ইন্টারন্যাশনাল’-এ নিয়ে যান। সেখানে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে, ভয় দেখিয়ে ও ব্ল্যাকমেইলিং এর মাধ্যমে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। প্রমাণ হিসেবে হোটেলের রেজিস্টার বইয়ে স্বাক্ষর রয়েছে। লালমোহন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ বাবুল আক্তার এ প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ধর্ষণের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনে অভিযোগ জানালেও তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বরং সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্য ও তার সহযোগীরা পরবর্তীতে আমাকে ব্যবহার করে আমার স্বামীয় বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ ও অপহরন মামলা দায়ের করার ষড়যন্ত করছে। আর এ ষড়যন্ত্রের কারণ হচ্ছে- মূল ধর্ষণ মামলা দুর্বল করা এবং আমাকে আইনি জটিলতায় মেলে মামলা প্রত্যাহারে বাধ্য করা। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে ৪ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- অভিযুক্ত ধর্ষক এসআই রাজিব হোসেন এবং তার সহযোগীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা; বরিশালে নিজ জীবনের নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় এসআই রাজিবের বিরুদ্ধে ঢাকায় এফআইআর গ্রহণের সুযোগ প্রদান; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট না আসার অজুহাতে মামলা নিয়ে যাতে কোনো বিলম্ব না হয়; আমার স্বামীর বিরুদ্ধে সাজানো অপহরণ ও মিথ্যা ধর্ষণ মামলাটি অবিলম্বে তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং
আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং পুলিশ যাতে নতুন করে কোনো মিথ্যা মামলায় আমাদের ফাঁসাতে না পারে- সে ব্যবস্থা নেওয়া।