Sunday 16 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হিলি স্থলবন্দরে রাজস্ব ঘাটতি ৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ মার্চ ২০২৫ ১৬:২৯ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ১৬:৩০

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন, দিনাজপুর

দিনাজপুর: দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর হিলি। কয়েক বছর ধরেই রাজস্ব ঘাটতিতে থাকছে বন্দরটির কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এবারো ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের প্রথম ৮ মাসে রাজস্ব ঘাটতিতে পড়েছে হিলি স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ। প্রথম ৮ মাসে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৪৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৩৮ কোটি টাকা। ফলে ৪৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা রাজস্ব ঘাটতিতে রয়েছে হিলি কাস্টমস। কম শুল্কযুক্ত ও শুল্ক মুক্ত পণ্য বেশি আমদানি হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতিতে প্রভাব পড়েছে বলে দাবি কাস্টমস কর্তৃপক্ষের, তবে কাস্টমসের অসহযোগিতাকে দায়ী করছে বন্দরের ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞাপন

হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের তথ্যমতে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) হিলি স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছে ৭৪০ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৫ কোটি ৯ লাখ টাকা; বিপরীতে এসেছে ৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগস্ট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা; বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা; বিপরীতে এসেছে ৫৫ কোটি আট লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা; বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা; বিপরীতে এসেছে ৪৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৯ কোটি ২১ লাখ টাকা; বিপরীতে এসেছে ৫৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। জানুয়ারিতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৪৯ কোটি ৩১ লাখা টাকা আর ফেব্রুয়ারীতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ কোটি ৬১ লাখ টাকা যার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৭০ কোটি ২ লাখ টাকা।

বন্দরের আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, ‘রাজস্ব ঘাটতির মূল কারণ হলো এই বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয়; যেমন চাল-ডাল, খৈল, ভুসি, ভুট্টা ও পেঁয়াজসহ অধিকাংশই শুল্কমুক্ত। সবচেয়ে বেশি আমদানি হয় চাল। এতে যে শুল্ক ছিল সরকার সেটি প্রত্যাহার করেছে। এ কারণে রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। আরেকটি কারণ হলো আগে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হতো। কিন্তু সরকার ট্রাকের চাকা অনুযায়ী শুল্কায়নের প্রথা চালু রাখায় ফল আমদানি বন্ধ আছে। এটি যদি উন্মুক্ত করে দিতো অর্থাৎ যে যতটুকু পণ্য আমদানি করবে, সেই পরিমাণ পণ্যের শুল্ক দেবে তাহলে প্রচুর পরিমাণ ফল আমদানি হতো। সেইসঙ্গে রাজস্ব বাড়তো। পাশাপাশি অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রেও এখানে বৈষম্য আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেনাপোলে যে পণ্য সাড়ে তিন ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে, একই পণ্য হিলি বন্দরে পাঁচ ডলারে শুল্কায়ন করা হয়। ফলে আমদানিকারকরা এই বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব জটিলতা কাটলে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বাড়বে, সেইসঙ্গে রাজস্বও বাড়বে। এসব জটিলতা কাটলে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি বাড়বে, সেইসঙ্গে রাজস্বও বাড়বে।’

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন বলেন, ‘যেসব পণ্যের ওপর রাজস্ব বেশি সেগুলো হিলি দিয়ে আমদানি হয় না। কারণ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এইচএস কোড ও শুল্ক নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে। ফলে ওসব পণ্য বেনাপোল দিয়ে আমদানি হয়। ফলে সরকারের রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটিতে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আমরা চাই এসব জটিলতা দ্রুত কাটুক এবং হিলি কাস্টমসের রাজস্ব আয় আরও বাড়ুক।’

হিলি স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, ‘এই শুল্ক স্টেশন দিয়ে কম শুল্কযুক্ত ও শুল্ক মুক্ত পণ্য বেশি আমদানি হবার কারনে রাজস্ব আদায়ে কিছু ঘাটতি রয়েছে। তবে অর্থ বছরের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব কারন গেলো ফেব্রুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রার থেকে বেশি রাজস্ব এসেছে বেশি শুল্ক যুক্ত পণ্য আমদানির কারনে। বিশেষ করে জিরা, এলাচসহ মসলা পণ্যের আমদানি বাড়লে রাজস্ব ঘাটতি হবে না।’

সারাবাংলা/এনজে

আমদানি-রফতানি রাজস্ব শুল্ক হিলি স্থলবন্দর

বিজ্ঞাপন

মজাদার সোনালি মিষ্টি
১৬ মার্চ ২০২৫ ১৮:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর