ঢাকা: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন দৃশ্যমান। কিন্তু সে অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়ছে না, বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
এ প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষার মান কীভাবে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত চেয়েছেন তিনি।
শনিবার (২২ মার্চ) ময়মনসিংহের টাউন হলে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়ন নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ বিষয়ে মতামত চান।
প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক স্কুল ছাড়া অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিল না। এখন কিন্ডারগার্টেন, মাদ্রাসা হয়েছে। মানুষ কিন্ডারগার্টেন ও মাদ্রাসায় শিশুদের পড়াচ্ছে। আমরা প্রাথমিকে বিনা বেতনে পড়াচ্ছি, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দিচ্ছি, উপবৃত্তি দিচ্ছি- তারপরও অভিভাবকরা তাদের শিশুদের পয়সা খরচ করে অন্যত্র কেন পড়াচ্ছেন? আমাদের প্রাথমিকের শিক্ষার অবকাঠামো ভাল, শিক্ষকরা মানসম্পন্ন, পড়াশুনায় অগ্রসর, বেতন কাঠামো মোটামুটি ভাল, চাকরির নিশ্চয়তা আছে। অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলকভাবে কম। তারপরেও অভিভাবকরা কেন তাদের শিশুদের অন্য বিদ্যালয়ে পড়াবেন? প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সমস্যা কোথায়? কীভাবে উন্নয়ন করতে পারি-সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট মতামত আশা করছি।
উপদেষ্টা আরো বলেন, মানসম্মত শিক্ষা সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমাদের লক্ষ্য শিশুদের সক্ষম করে তোলা। শিক্ষকরা শিশুদেরকে মুখস্ত না করিয়ে তারা যেন মাতৃভাষায় বলতে, পড়তে, লিখতে ও গণিত করতে পারে- সে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। যদি শিশুরা পারে, তাহলে বুঝবেন আপনি সর্বোচ্চ করে দিয়েছেন। এরপর সে নিজে নিজেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে লেখাপড়া করতে পারবে। প্রধান শিক্ষক তার স্কুলের শিক্ষার মানোন্নয়নে টার্গেট ঠিক করবেন। শিশুদের টার্গেট সে যেন মাতৃভাষায় লিখতে পড়তে বলতে পারে, গণিত করতে পারে, কিছুটা ইংরেজি পারে। আমরা সহায়তা করব। মাতৃভাষায় দক্ষ হলে সহজেই ইংরেজিসহ বিদেশি ভাষা শিখতে পারবে। শিক্ষকের দায়িত্ব পড়াশোনার মান বাড়ানো, তাহলে অনেক সমস্যা কেটে যাবে। সকলে নিজ নিজ ক্ষেত্রে উদ্যোগী হলে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন করা সম্ভব।