দেশব্যাপী র্যাবের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
৩০ মার্চ ২০২৫ ১৫:১৯ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ১৬:১৫
ঢাকা: পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সার্বিকভাবে সব ধরণের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে এ বছর র্যাব ফোর্সেস বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে।
রোববার (৩০ মার্চ) দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে র্যাব মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তার বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যাটালিয়নদের নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে। সারা দেশব্যাপী পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদ্যাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য রয়েছে র্যাবের কন্ট্রোল রুম, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ, ফুট ও মোবাইল পেট্রল, ভেহিক্যাল স্ক্যানার, অবজার্ভেশন পোস্ট, চেক পোস্ট এবং সিসিটিভি মনিটরিং।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষ্যে ঘরমুখী মানুষের নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করার জন্য সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে নানাবিধ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে র্যাব ফোর্সেস ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্রের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেছে। ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ ও কালোবাজারিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসায় সাধারণ জনগণ সহজেই ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পেরেছেন এবং নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দে ঈদে বাড়িতে ফিরছেন।
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে দেশব্যাপী ঘরমুখী মানুষকে নিরাপত্তা প্রদানের পাশাপাশি র্যাবের সেবা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সকল ব্যাটালিয়নদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনাল, ফেরিঘাট এবং গুরুত্বপূর্ণ জনসমাগম স্থানগুলো রয়েছে র্যাব ফোর্সেসের বিশেষ নজরদারি। সড়ক, রেল এবং নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও হয়রানি, অজ্ঞান/মলম পার্টি, চাঁদাবাজি এবং ছিনতাই রোধকল্পে নজরদারি ও প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই বাস, পিকআপ, লেগুনা ইত্যাদি যানগুলোর চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট আছে কিনা তা যাচাই করা এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন টার্মিনাল ও আশপাশের স্থানগুলোতে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সড়ক ও নৌ পথে বাস/লঞ্চ চালকেরা যেন প্রতিযোগিতামূলকভাবে বাস/লঞ্চ চালনা না করে সেজন্য বাস ও লঞ্চ মালিক ও চালকদের সতর্কীকরণ ও সচেতন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে (জাতীয় ঈদগাহ, শোলাকিয়া ঈদগাহ ও দিনাজপুর বড় ঈদগাহ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহসহ গুরুপূর্ণ ঈদগাহগুলোতে নিরাপত্তা সুইপিং করা হবে এবং প্রয়োজনীয় সিসিটিভি কাভারেজ থাকবে।
গুরুত্বপূর্ণ শপিং মল, বিপণী বিতান ও জন সমাগমপূর্ণ এলাকায় স্ট্যাটিক টহল ও গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধির মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে; যাতে করে সাধারণ জনগণ উৎসব মুখর পরিবেশে এবং নিরাপদে কেনাকাটা শেষ করে বাড়ি ফিরতে পারে।
রাজধানীসহ সারাদেশে ঈদের ছুটিতে যাওয়া মানুষের বাসস্থান, কর্মস্থল, শপিংমলসহ অন্যান্য স্থানে চুরি ও ডাকাতি প্রতিরোধে র্যাবের নজরদারী ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।
যে কোনো নাশকতা/হামলা মোকাবিলায় র্যাব ফোর্সেসের স্পেশাল কমান্ডো টিমকে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত সংখ্যক টহল মোতায়েন ও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে নাশকতাসহ যেকোনো ধরণের উদ্ভুত পরিস্থিতি কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
এ ছাড়া গোয়েন্দা তথ্য, সাইবার মনিটরিংসহ অন্যান্য তথ্য বিশ্লেষণ পূর্বক পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে কোনো ধরণের নাশকতার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। গোয়েন্দা নজরদারি ও সাইবার জগতে মনিটরিং বৃদ্ধির মাধ্যমে যে কোনো ধরণের নাশকতাকারীদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিতে প্রস্তুত রয়েছে র্যাব।
সারাবাংলা/ইউজে/ইআ