প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর ইতিবাচক: মির্জা ফখরুল
৩০ মার্চ ২০২৫ ১৫:০০ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ১৫:৪২
ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফর ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফখরুল বলেন, ড. ইউনূসের চীন সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ইতিবাচক বিএনপি। ভূরাজনৈতিক কারণেই চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলাটা জরুরি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ভারত, চীন পাকিস্তান, যুক্তরাষ্ট্র দেশের সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক গঠন করে চলতে চাই। সকল দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। আমাদের তো এমন নয় যে একে বড় ধরনের কর্তৃত্ব দরকার। কিংবা বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক করা দরকার। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এই দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে পাশের দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে। এমনকি মিয়ানমারের সঙ্গেও আমাদের সুসম্পর্ক করে চলা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এই দেশগুলোর দেখা হয়েছে। একটি পজেটিভ আলোচনা হয়েছে। এবং যে সইগুলো হয়েছে সেগুলো পজেটিভ একটি দিক।
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, তারা তো পশ্চিমাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি তাদের একটা আগ্রহ রয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশ একটি ইনপেসিফিক এরিয়ার মধ্যে। সে জন্যই হয়তো বাংলাদেশের প্রতি একটা আগ্রহ রয়েছে এই দেশগুলোর। তারা চায় বাংলাদেশকে তাদের সঙ্গে রাখতে। বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো কাজ হবে এটা নিজের স্বার্থে কাজে লাগানো। আমাদের নিজেদের স্বার্থে অন্যান্য দেশগুলোর আমাদের দেশের প্রতি যে কারণে আগ্রহ সেই আগ্রহটাকে কাজে লাগাতে পারলে আমরা উপকৃত হব।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের দেশের জন্য একটি মৌলিক পরিবর্তন এসেছে। এর আগে যে ফ্যাসিবাদ সরকার ছিলেন তিনি এই দেশগুলোতে গেলেও, যে চুক্তি বা স্বাক্ষরগুলো হতো যে কাজগুলো হতো সেগুলো শুধুমাত্র আওয়ামী লীগকে কেন্দ্র করে কাজ হতো অর্থাৎ আওয়ামী লীগই শুধু উপকৃত হত। এই সরকারের বাইরে আর কিছু তারা করতে পারত না যে কারণে চিন ও আর অন্য দলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে নাই। আমাদের সাথেও কিন্তু তাদের খুব সুসম্পর্ক ছিল। কিন্তু আমাদের কেউ সেভাবে সহযোগিতা তারা করতে পারে নাই। এখন চীনের সঙ্গে আমাদের কথা হচ্ছে। আমার সঙ্গেও কথা হয়েছে, আমাদের পলিটিক্যালি অন্যান্যদের সঙ্গেও কথা হচ্ছে। সুতরাং আবার আমাদের দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি হচ্ছে।
চীন বাস্তববাদী রাজনীতিতে বিশ্বাসী এমন মন্তব্য করে মীরজাফরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চীন বাস্তববাদী রাজনীতি করে। তারা আবেগ টাবেগে বিশ্বাস করে না বাস্তবতা দিয়েই তাদের রাজনীতি চালায়। আমি এটাকে এপ্রিশিয়েট করি। এটা পুরোপুরি ভাবে তাদের নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট। আমাদের রাজনীতিও এমন হওয়া উচিত।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা রাষ্ট্র চালিয়েছে আগে আমরা আবারও রাষ্ট্র চালাবো বলে আশা করি। আমাদের সব সময় আমাদের বাস্তব পরিস্থিতিটা চিন্তা করে এগোতে হয়। একদিকে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক রেখে চলতে হয় অন্যদিকে আবার চীনের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়। একইভাবে আমাদের অন্যান্য ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সঙ্গেও সুসম্পর্ক রেখে চলা উচিত বলে আমরা মনে করি। এটা বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক যে অবস্থান সেই অবস্থান থেকে এটা প্রয়োজন। আর সেক্ষেত্রে আমার দেশের যে শত্রু তাকে ভারতবর্ষে বসিয়ে রেখে আমি আমার নির্বাচনটা পেছাব, এটা আরও বেশি সংকট তৈরি করবে বলে আমার মনে হয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমরা বারবার বলছি যে আমরা যে নির্বাচনটা চাচ্ছি এটা আমরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য চাচ্ছে বিষয়টা এমন নয়। আমরা মনে করি নির্বাচনটা হলেই এই সরকার একটা ম্যান্ডেড পাবে। আর এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। একজন নির্বাচিত সরকার যে নির্বাচিত হয়ে আসে অন্যদিকে অনির্বাচিত সরকারের যে শক্তি সেই দুই শক্তির মধ্যে কিন্তু একটা পার্থক্য অবশ্যই রয়েছে। একজন শক্তিশালী নির্বাচিত সরকার যেটা করতে পারবে অনির্বাচিত সরকারের যেগুলো করার ক্ষমতা নাই। আর বিএনপি সেই ২০১৬ সালেই কমিটমেন্ট করেছে যে ক্ষমতায় আসলে এইসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এফএন/ইআ