মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত চারুকলার শিক্ষার্থীরা
১ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪১ | আপডেট: ১ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪৭
ঢাকা: কেউ কাগজ কেটেছেঁটে তৈরি করছেন বাংলার বাঘ। কেউবা শোলা দিয়ে বানাচ্ছেন সমৃদ্ধির প্রতীক লক্ষ্মীপ্যাঁচা। কেউ ব্যস্ত রংতুলি দিয়ে মাটির সরায় নকশা অঙ্কণে। এমনই দৃশ্য দেখা গেলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে। তাদের ব্যস্ততাই বলে দিচ্ছে, ঈদের আমেজের মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বৈশাখ বরণের প্রস্তুতি।
‘নববর্ষে ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’, এই প্রতিপাদ্যে এবার পালন হবে নববর্ষ উদযাপনের শোভাযাত্রা। সেই আয়োজনের অংশ হিসেবে, চারুকলার শিক্ষার্থীরা রংতুলিতে তৈরি করছেন বর্ষবরণ শোভাযাত্রার মুখোশ। তাদের আঁকায় উঠে আসছে বাংলার রূপ-ঐতিহ্য।

শিল্পীরা ব্যস্ত রঙ তুলি নিয়ে। ছবি: সারাবাংলা
কথা বলে জানা গেছে, বড় আকারে রাজা-রানির মুখোশ থাকবে অন্তত চারটি। এ ছাড়া থাকবে প্যাঁচা, পাখি, ফুলের শতাধিক মুখোশ। এগুলো সুলভে বিক্রিও করা হবে। আর সেই অর্থ দিয়ে, শোভাযাত্রার খরচ মেটানো হবে ।
চারুকলার মাঠে দেখা গেলো প্রকৌশলিদের ব্যস্ততা। সাথে আছেন চারুকলার প্রাক্তণ শিক্ষার্থী ও মোটিভ শিল্পীরা। আর কিছুদিন পরই ঈদের ছুটিতে থাকবেন অনেকেই। তাই আগে ভাগেই কাজ এগিয়ে নিতে ব্যস্ত তারা। তাঁদের নির্দেশনায় কাজ করছেন কারিগররা। তৈরি হচ্ছে বিশাল প্রতীকী ভাস্কর্য। এই ভাস্কর্যে থাকবে বিশাল আকারের স্বৈরাচারের প্রতীকী। এছাড়াও থাকবে একটি বাঘের ভাস্কর্য। থাকবে পাখির একটি প্রতিকী ভাস্কর্য।

প্রস্তুত করা হচ্ছে মঙ্গল শোভাযাত্রার ভাস্কর্য। ছবি: সারাবাংলা
এ বিষয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ সারাবাংলাকে জানান, ‘‘চারুকলা অনুষদ বরাবরের মতোই শোভাযাত্রার মূল আয়োজন করবে। তবে এবার এ শোভাযাত্রা হবে অন্তর্ভুক্তিমূলক। এতে দেশের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব থাকবে। তারা তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপাদানগুলো নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেবে। শোভাযাত্রার কোন পথে যাবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। আমাদের কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু শুধু মাত্র প্রতিপাদ্য ঠিক করেছি। এছাড়া চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তই নেয়া হয়নি। কোনো সিদ্ধান্তে আসলে আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সবাইকে জানাবো ’’

ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শিল্পীরা। ছবি: সারাবাংলা
১৯৮৯ সালে পহেলা বৈশাখে শুরু হয় এই মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুরুতে এর নাম ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ ছিল। তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থাকে মাথায় রেখেই এমনটা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে এটি ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ হিসেবেই পরিচিত হয়।
মূলত খুব সকালে, চারুকলা ইন্সটিটিউট থেকে সম্মিলিতভাবে এই “শোভাযাত্রা” বের হয়। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই নয় সাধারণ মানুষও আনন্দ এবং খুশি নিয়ে অংশগ্রহণ করে এই মঙ্গল শোভাযাত্রায়। এবারও চলছে সেই প্রস্তুতি।
এবারও আনন্দ ও উল্লাসের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেবে বাঙালি। তারই প্রস্তুতি চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে।
সারাবাংলা/এফএন/এনজে