Tuesday 08 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ওয়াকফ আইনে ভারতের মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৫৪ | আপডেট: ৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৭

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

ঢাকা: ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া মুসলিম ওয়াকফ (সংশোধন) আইনে সে দেশের সংলঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।

রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ভারতের পার্লামেন্টে পাস হওয়া মুসলিম ওয়াক্ফ (সংশোধন) বিল ২০২৫ আইনটির বিভিন্ন ধারা বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি যে, ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের অধিকার খর্ব করা এবং বৈষম্য মূলক আচরণের চেষ্টা করা হয়েছে এই আইনে। ভারতে মুসলমানরা এবং বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন এই বিলকে অসাংবিধানিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ওয়াক্ফ হল ইসলামী দানের একটি প্রাচীন ব্যবস্থা। ওয়াক্ফের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি স্থায়ীভাবে সাধারণত জমির মতো কোনো সম্পত্তি ধর্মীয় বা জনহিতকর কাজে ব্যবহারের জন্য দান করেন। এ ধরনের ওয়াক্ফ সম্পত্তি বিক্রি করা বা কারও নামে হস্তান্তর করা যায় না।’’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘ভারতের জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ২০ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্য, অধিকার, সংস্কৃতি ও স্বার্থবিরোধী এই আইনকে অপব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে যা ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। ভারতে ওয়াক্ফ বোর্ডগুলোর অধীনে প্রায় ১০ লাখ একর সম্পত্তির মধ্যে অধিকাংশই ব্যবহৃত হয় মসজিদ, মাদরাসা, কবরস্থান ও এতিমখানার মতো জনকল্যাণ মূলক কাজে। নতুন আইনে পরিচালনা বোর্ডে অমুসলিম সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি বিতর্কের সৃষ্টি করেছে, যার ফলে মুসলিম নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হতে পারে।’’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘‘মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকারে হস্থক্ষেপের কারণে এবং বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে- এ রকম কোনো পদক্ষেপ রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গ্রহণ করা সমিচীন নয় বলে আমরা মনে করি। ভারতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের এই জাতীয় বোর্ডে অথবা কোনো আইনী সংগঠনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোনো অন্তর্ভুক্তি দেখা যায় না।’’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘‘সেক্ষেত্রে এই আইনটি একটি বৈষম্যমূলক আইন হিসাবে বিবেচিত হবে। নতুন আইনে পরিবর্তনগুলো শত শত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ওয়াক্ফ জমির ওপর গড়া মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবির্ষ্যৎ অনিশ্চিত করে তুলতে পারে। নতুন আইনে অমুসলিম সদস্যদের এই সম্পত্তিসমূহের ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনে যে এখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে, তা মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল।’’

তিনি বলেন, ‘‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ‘ল’ বোর্ডের মতো সংগঠনগুলোর মতে এই আইন ইসলামী ওয়াক্ফ ব্যবস্থার মূল চেতনার পরিপন্থি। তাদের মতে, ওয়াক্ফ বোর্ডের পরিচালনা মুসলমানদের দ্বারাই হওয়া উচিত। তারা একে মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকারে সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল বলে অভিমত দিয়েছেন।’’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘ভারত একটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সকল ধর্মাবলম্বী নগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের ভূমিকাকে সমুন্নত রেখে উক্ত আইনটি ভারত সরকার পুনঃবিবেচনা করবে, আমরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আঞ্চলিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে বলে আমরা মনে করি।’’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

ওয়াকফ আইন সালাহউদ্দিন আহমেদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর