Thursday 10 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গাজায় ‘কিলিং জোন’ গড়তে বিস্তৃত ধ্বংসযজ্ঞ ইসরায়েলের: দাবি সৈনিকদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৩১ | আপডেট: ৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৫৫

অভিযানে অংশ নেওয়া ইসরায়েলি সৈনিক। ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা গুঁড়িয়ে ‘কিলিং জোন’ তৈরি করেছে বলে দাবি করেছেন অভিযানে অংশ নেওয়া সৈনিকরা। তারা জানিয়েছেন, ‘গাজার সীমান্তবর্তী প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকার মধ্য কাউকে দেখলেই গুলি করার নির্দেশ ছিল।’

‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ নামের ইসরায়েলি ভেটেরানদের একটি সংগঠন এই তথ্য তুলে ধরে ‘দ্য পেরিমিটার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল একটি খোলা ভূমি তৈরি করা, যেখানে কোনো ভবন, গাছপালা বা মানুষ থাকবে না, তাতে ইসরায়েলি বাহিনী সহজেই যেকোনো প্রবেশকারীকে টার্গেট করতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

সৈনিকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এই এলাকায় ঘরবাড়ি, কারখানা, কৃষিজমি, এমনকি মসজিদ, স্কুল, কবরস্থান পর্যন্ত ধ্বংস করা হয়। তাদের অনেকেই জানান, প্রতিদিন নির্দিষ্টসংখ্যক ঘরবাড়ি ধ্বংসের নির্দেশ দেওয়া হতো। এক সৈনিক বলেন, ‘আমরা জানতাম না কী ধ্বংস করছি বা কেন করছি। এখন বুঝি, এই কর্মকাণ্ড ন্যায্য ছিল না।’

অভিযানে অংশ নেওয়া একজন সার্জেন্ট বলেন, ‘এটা ছিল প্রতিদিনের রুটিন সকালে উঠে প্রতিটি প্লাটুনকে পাঁচ থেকে সাতটি বাড়ি ধ্বংসের কাজ দেওয়া হতো।’ অন্য এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা গিয়েছিলাম প্রতিশোধের মনোভাবে। কিন্তু শেষে যা করেছি তা হলো পুরো পরিবার, শিশু, এমনকি প্রাণী পর্যন্ত হত্যা।’

প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেনাদের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, সীমান্ত অঞ্চলে কাউকে দেখলেই গুলি করতে হবে। এক ক্যাপ্টেন জানান, ‘আমাদের জন্য নির্ধারিত ছিল, কোনো পুরুষ প্রবেশ করলে হত্যা, নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে তাড়িয়ে দাও, অর্থাৎ ট্যাঙ্কের গুলিতে ভয় দেখানো।’

বিজ্ঞাপন

এ ধরনের অভিযান গাজার প্রায় ১৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে পরিচালিত হয়, যা গাজার মোট কৃষিজমির ৩৫ শতাংশের সমান। স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, সীমান্ত থেকে ১ দশমিক ২ কিমি পর্যন্ত প্রতিটি ভবন পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।

এদিকে ইসরায়েল সরকার দাবি করছে, এই অভিযান হামাসকে লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং বেসামরিক জনগণকে অনাহারে রাখার অভিযোগে তদন্ত চলছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এই প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

সৈনিকদের ভাষ্যমতে, অনেক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন এই অদৃশ্য সীমা অতিক্রমের চেষ্টা করার সময়। অনেকে ক্ষুধার কারণে গাছপালা তুলতে সীমান্ত এলাকায় ফিরে যাচ্ছিলেন। এক সার্জেন্ট বলেন, ‘মানুষ ক্ষুধার্ত। তারা খেতে যায়, আর আমরা গুলি করি। জনগণের চাহিদা পূরণ করছে সেনাবাহিনী। যেখানে বলা হয়, গাজায় কোনো নিরীহ মানুষ নেই।’

সারাবাংলা/এনজে

'কিলিং জোন' ইসরায়েলি সৈনিক গাঁজা ধ্বংসযজ্ঞ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর