Saturday 12 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদে সড়কে ৩২২ প্রাণহানি, আহত ৮২৬

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:৪৮

লোহাগাড়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে ৩১৫টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩২২ জন নিহত এবং ৮২৬ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঈদের সময়ে রেলপথে ২১টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত, আট জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে চারটি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত, এক জন আহত ও এক জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৩৪০টি দুর্ঘটনায় ৩৫২ জন নিহত ও ৮৩৫ জন আহত হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনো সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২৪ মার্চ থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিনে ৩১৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২২ জন নিহত ৮২৬ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত ও এক হাজার ৩৯৮ জন আহত হয়েছিলেন। আগের বছরের সঙ্গে তুলনায় এবছরের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ২১.০৫ শতাংশ, প্রাণহানি ২০.৮৮ শতাংশ ও আহত ৪০.৪১ শতাংশ কমেছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৩৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৫১ জন নিহত ও ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪২.৮৫ শতাংশ, নিহতের ৪৬.৮৯ শতাংশ এবং আহতের ১৮.৭৬ শতাংশ প্রায়।

এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৭০ জন চালক, ৪৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫০ জন পথচারী, ৬০ জন নারী, ৪০ জন শিশু, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ২০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৬ জন শিক্ষক, ৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, এক জন সাংবাদিকের পরিচয় মিলেছে।

বিজ্ঞাপন

তথ্যানুযায়ী, মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩৮.৪১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.২৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩৪.৬০ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৩.৪৯ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৬৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ১.৫৮ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানীর বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে। তবে এবার দীর্ঘ ছুটির কারণে ধাপে ধাপে বাড়ি ফেরার সুযোগ হওয়ায় ঈদযাত্রা স্বস্থিদায়ক হওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা কিছুটা কমেছে বলে সংগঠনের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।

সংবাদ সম্মেলনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা অবাধে চলাচল, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা, সড়কে মিডিয়ামে রোড ডিভাইডার না থাকা, অন্ধবাঁকে গাছপালায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন, অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন এবং বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানো উল্লেখ করা হয়।

এ সময় দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো-

  • মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা,
  • জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা,
  • দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া,
  • যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান,
  • গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে সার্ভিস লেনের ব্যবস্থা করা,
  • সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা,
  • চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা,
  • মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা,
  • রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন,
  • সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ,
  • উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওর্য়াক গড়ে তোলা,
  • নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো,
  • মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা,
  • নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা,
  • মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং ঈদের ছুটি বাড়ানো।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/ইআ

ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা প্রাণহানি বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বিজ্ঞাপন

ছবির গল্প মার্চ ফর গাজা
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৪৫

আরো

সম্পর্কিত খবর