সাতক্ষীরা উপকূলে জলবায়ু ধর্মঘট: জলবায়ু ন্যায্যতা ও তহবিলের দাবি
১১ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪২ | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২০
সাতক্ষীরা: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় অঞ্চলের স্থানীয়রা জলবায়ু ন্যায্যতা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিতের দাবিতে ধর্মঘট পালন করেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকালে বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের যুবকরা একত্রিত হয়ে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে জলবায়ু ধর্মঘটে অংশ নেয়।
এ সময় তারা ‘উপকূলের জীবন, প্রকৃতির দান; জলবায়ু ন্যায্যতা, আমাদের অধিকার’, ‘জলবায়ু ন্যায্যতা নিশ্চিত কর, সবুজ পৃথিবী রক্ষা কর’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, ক্লাইমেট জাস্টিস’, ‘কার্বন নিঃসরণ কমাও, আমাদের ভবিষ্যৎ বাঁচাও’, ‘জলবায়ু তহবিলের সঠিক ব্যবহার চাই’ প্রভৃতি স্লোগান দেয়।
যুব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের (এসএসএসটি) আয়োজনে এই ধর্মঘটে অংশ নেন শ্যামনগর উপজেলা যুব স্বেচ্ছাসেবী সমন্বয় কমিটি, সবুজ সংহতি, স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বারসিক।
এসএসএসটি পদ্মপুকুর ইউনিটের সভাপতি ধীরাজ কুমার মন্ডলের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। এর ফলে এখানকার মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে।’
তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে হবে। জলবায়ু তহবিলের অর্থায়নের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবিও জানান।
পরিবেশ কর্মী ও যুব জলবায়ু যোদ্ধা স. ম. ওসমান গণি সোহাগ বলেন, ‘তথাকথিত উন্নত এবং ধনীদেশগুলো কার্বন নির্ভর বিলাসি জীবন ত্যাগ করে পর্যন্ত জলবায়ু তহবিল জলবায়ু সংকটে নিপতিত দেশগুলোতে বিনা শর্তে দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। ধনী দেশগুলোর কোনো ধরনের জলবায়ু ঋণ আমরা মেনে নিব না। আমরা আমাদের অধিকার চাই, জলবায়ু ন্যায্যতা চাই, আমরা এই ধরণীকে বাঁচাতে চাই।’
যুবকদের এই ধর্মঘট স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। অনেকেই তাদের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সবুজ সংহতির সদস্য ও পদ্মপুকুর ইউপি সদস্য উত্তম কুমার মন্ডল, এসএসএসটির সদস্য সচিব মো. সাইদুল ইসলাম, বারসিকের কর্মসূচি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ মন্ডল, জলবায়ু যোদ্ধা মারুফ হোসেন মিলন, উন্নয়ন কর্মী বরষা গাইন, উপকূলীয় যুব সবুজ আন্দোলনের আহ্বায়ক ওবায়দুল্লাহ আল মামুনসহ আরও অনেকে।
এই জলবায়ু ধর্মঘটটি উপকূলীয় অঞ্চলের যুবকদের জলবায়ু ন্যায্যতা ও তহবিলের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাদের এই আন্দোলন হয়তো নীতিনির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করবে।
সারাবাংলা/এমপি