সিলেটে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মীর হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪ নেতা আহত
১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:০৩
সিলেট: সিলেট নগরীর মাছিমপুর এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা মব সৃষ্টি করে ব্যারিকেড দিয়ে হামলা চালিয়েছে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ওপর। তাদের হামলায় সংগঠনের মহানগরের সাবেক সদস্য সচিব আজিজুল হোসেনসহ চার নেতা গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের ৩৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় সমগ্র সিলেট নগরীতে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এলাকাবাসী জানায়, মব সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনুসারীরা এলাকায় সংঘাতের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, আজিজুল হোসেন তার অনুসারীদের নিয়ে ল’ কলেজ সংলগ্ন একটা চা স্টলে প্রায় নিয়মিত বসেন। প্রতিদিনের মতো শুক্রবারও তিনি আড্ডা দিতে জড়ো হন। কিন্তু তাদের আড্ডাস্থলের সামনে গাড়ি পার্কিং করিয়ে রাখেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মাছিমপুর এলাকার বাসিন্দা আবদুল হান্নানের ছেলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী অপু। এ নিয়ে আজিজের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে অপর পক্ষের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসী দীপুর নেতৃত্বে কয়েকজন যুবক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আজিজুল হোসেনের ওপর হামলা চালায়। এতে আজিজ গুরুতর জখম হলে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকায় ১৮টি সেলাই দেওয়া হয়।
এ সময় আজিজ ছাড়াও যুবদল কর্মী রুম্মান খান মুন্নাসহ কয়েকজন আহত হন। অভিযুক্ত দীপু আওয়ামী লীগ সমর্থিত বরখাস্ত হওয়া মহিলা কাউন্সিলর শারমিন আক্তার রুমির স্বামী।
আহত আজিজ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীর অনুসারী বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে আজিজের অনুসারী সেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মাছিমপুর এলাকায় যান। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আক্রমণ, পালটা আক্রমণের ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, দীপুর নেতৃত্বে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সংঘবদ্ধ নেতাকর্মীরা দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় মাদক ও শিলং তীর নামক জুয়া খেলা পরিচালনা করে আসছে। এই জুয়াখেলায় তাদের লাখ লাখ টাকা আয় হয়।
রাতে আওয়ামী লীগের হামলার খবর পেয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা গার্ডেন টাওয়ার এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেন। এতে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সেনাবহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশ সদস্যরাও ঘটনাস্থলে ছিলেন।
আজিজুল হোসেনকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, ‘বিএনপি নেতা আজিজের ওপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী দীপুর নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মহিলা কাউন্সিলরের স্বামী। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা রয়েছে এবং পুলিশ তাকে খুঁজছে। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের এই আসামিকে গ্রেফতারের দাবি জানাই। মব সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ সিলেটে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে।’
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহরিয়ার আলম জানান, চায়ের দোকানে বসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।
সারাবাংলা/এমপি