Monday 14 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যারা কর দেয়, তারাই বেশি হয়রানির শিকার: আব্দুল আউয়াল মিন্টু

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৮ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৪৯

রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘প্রাক বাজেট আলোচনা ২০২৫-২৬: বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু

ঢাকা: যারা কর দেয়, তারাই বেশি হয়রানির শিকার- বলে মন্তব্য করেছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

করদাতাদের এ হয়রানি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজস্ব ও মুদ্রানীতির মধ্যে সামঞ্জস্য থাকরত হবে। রাজস্ব ও মুদ্রানীতি এমন হতে হবে- যা সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতের জন্য প্রযোজ্য।

রোববার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘প্রাক বাজেট আলোচনা ২০২৫-২৬: বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), দৈনিক সমকাল ও চ্যানেল ২৪-এর যৌথ উদ্যোগে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমরা এমন একটা বাজেট চাই, যা ব্যবসা-বাণিজ্য বান্ধব। দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি বেসরকারি খাত। আমরা এমন নীতি চাই যেখানে আমাদের প্রত্যাশার কিছুটা হলেও যেন প্রতিফলিত হয়। আমরা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে চাই, এমনভাবে নীতি করা হোক, যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। আমরা ব্যবসা বাণিজ্যকে প্রতিযোগিতামূলক করতে চাই। আমাদের এমন একটি নীতি সহায়তা দরকার- যা দেশের শুধু রফতানি বৃদ্ধি নয়, রফতানি বৃদ্ধির সামর্থ্যকে বৃদ্ধি করতে পারে। আমরা এমন নীতি সহায়তা চাই, যাতে করে দেশের সার্বিক চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সার্বিক চাহিদা বৃদ্ধি না পেলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি বাড়বে না। আবার উৎপাদন করেও কোন লাভ হবে না। আমরা যদি একটি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করি, সেটি হয় আমাদের রফতানি করতে হবে, নতুবা অভ্যন্তরীণ বাজারে সেটি সরবরাহ করতে হবে। সার্বিক চাহিদা যদি আমরা বৃদ্ধি করতে পারি ও একইসঙ্গে যদি রফতানি সামর্থ্য বৃদ্ধি করতে পারি; তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমাদের লাভ হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য বেসরকারি খাতের জন্য সংকোচিত মুদ্রানীতি, আর সরকারি খাতের জন্য সম্প্রসারিত ব্যয় নীতি- এটি ঠিক নয়। সংকোচিত মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি কখনোই কমবে না। সংকোচিত মুদ্রানীতি মূল্যস্ফীতি কমানোর একমাত্র উপায় না। আমরা চাই এমন একটি মুদ্রানীতি ও এমন একটি রাজস্ব নীতি, যেটি সরকারের জন্য যেভাবে প্রযোজ্য, বেসরকারি খাতের জন্যও সেভাবে প্রযোজ্য। আবার রাজস্ব ও মুদ্রানীতিতেও সামঞ্জস্য থাকতে হবে।

আব্দুল আওয়াল মিন্টু বলেন, সরকারকে মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করতে হবে। এর আগে শুধু মিথ্যা কথা বলা হতো। উৎপাদন ৪০০ বিলিয়ন, ৫০০ বিলিয়ন..কাগজের খোঁচায় যদি উৎপাদন কমে ও বাড়ে তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধি করার দরকার কী। কর জিডিপি অনুপাত নিয়ে একেক সময় একক তথ্য পাওয়া গেছে। যে কারণে প্রথমে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সত্য বলার জন্য জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এনবিআরের কাছে আমার একটাই দাবি, যারা কর দেয়, তাদেরকে হয়রানি করবেন না। এনবিআরে ব্যয়ের শতকরা ৮০ শতাংশ ব্যয় হয় যারা ট্যাক্স দেয় তাদের আরও বেশি করে ধরার জন্য। আর ২০ শতাংশ ব্যয় হয় যারা ট্যাক্স দেয় না, তাদের ধরার জন্য। আমরা মতে, যারা কর দেয় তাদের জন্য ব্যয়ের মোট অর্থের মাত্র ২০ শতাংশ ব্যয় করা উচিৎ। আর যারা করা দেয় না- তাদের ধরার জন্য বা করজালে আনার জন্য মোট ব্যয়ের ৮০ শতাংশই ব্যয় করা উচিৎ। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দেশে উল্টোটা হচ্ছে। যারা কর দেয় তারাই বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কারণ একবার করজালে আসলেই এনবিআরের হয়রানি। আমরা চাই সরকারের আয় বাড়ুক, তবে সরকারের ব্যয় নিয়েও কথা হোক। আর মিথ্য কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত যারা করে, তাদের বিচার না করলে উন্নতি ঘটবে না। শুধু সরকারি আয় নয়, ব্যয়ের ব্যাপারেও সোচ্চার হতে হবে। যে সরকারই হোক, জনগণের কাছে মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, একদিকে সুদের হার বৃদ্ধি করা হবে অন্যদিকে খাদ্য সংকট সৃষ্টি করা হবে। এটা কোনো নীতি নয়। ব্যবসায়ীদের প্রতিটি বক্তব্য মূল্যবান, তা আমলে নিয়ে ব্যবসা সহায়ক নীতি করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকীন আহমেদ এর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, এফবিসিসিআই এর সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান, বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী প্রমুখ।

সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএস

'প্রাক বাজেট আলোচনা ২০২৫-২৬: বেসরকারি খাতের প্রত্যাশা' এফবিসিসিআই‘র সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর