পঞ্চগড়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষককে আটকে করে পুলিশে দিল জনতা
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৭
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান (৩২) নামে এক শিক্ষককে আটক করে গণধোলাইয়ের পর সদর থানা পুলিশে দিয়েছে ছাত্রজনতা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এবং ঘটনার আলামত যাচাই-বাছাই করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, ওই শিক্ষক পঞ্চগড় শহরের মসজিদ পাড়া এলাকায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে প্রাইভেট পড়াতো। পরে সেখানে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর সময় হাতেনাতে আটক করে বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে নেয় জনতা।
আটক ওই শিক্ষকের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের পাহাড়ডাঙ্গা এলাকায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, দুপুর দেড়টার দিকে জেলা শহরের মসজিদপাড়া এলাকায় গণিত বিষয়ের শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তার টিনশেড ঘরের কক্ষে পাঁচজন ছাত্রীকে নিয়ে উচ্চতর গণিত বিষয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছিলেন। পরে প্রাইভেট শেষে বাকি চারজন ছাত্রী চলে গেলেও একজন ছাত্রীর সঙ্গে যৌন হয়রানি শুরু করেন তিনি। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে মুঠোফোনে। পরে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দিয়ে বিচারের দাবিতে ইজিবাইকে করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের চত্বরে নিয়ে যান। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে সেখানে ঘিরে ধরেন। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশের সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। পরে ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে উত্তেজিত জনতা তাকে ফের গণধোলাই দেয়। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সদর থানা পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসেন।
এর আগেও ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এনিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়। তবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রত্যক্ষদর্শী আসিফ আহমেদ বলেন, শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান তার কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন বলে আমরা কিছু অভিযোগ পাই কয়েকজন ছাত্রীর কাছে। পরে আমরা আজ ঘটনার সত্যতা পেয়ে তাকে আটক করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় নিয়ে যাই। এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর আলামত পুলিশের হাতে দেওয়া হয়েছে।
মজাহারুল ইসলাম সেলিম বলেন, শিক্ষকেরা জাতি গড়ার কারিগর। তারাই যদি এমন কাজ করেন তাহলে কার কাছে আমরা শিক্ষা নিব। আমরা এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তাকে চাকরিচ্যুত করা হোক।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচএসএম সোহরাওয়ার্দী বলেন, ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে। আমরা ঘটনার আলামত, ভূক্তভোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
সারাবাংলা/এইচআই