ওয়ারীতে বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:১৬ | আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:৪১
ঢাকা: রাজধানীর ওয়ারী এলাকার একটি বাসা থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা হলেন স্বামী মোহাম্মদ মুঈদ (৩২) ও স্ত্রী আইরিন আক্তার রত্না (৩৫)।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে ওয়ারী থানার ওয়ার স্ট্রীট জমজম টাওয়ারের পাঁচ তলার একটি কক্ষ থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ দুটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
ওয়ারী থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) কাউছার আহম্মদ জানান, গতকাল রাতে খবর পেয়ে ওই বাসা থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। স্বামী মুঈদের মরদেহ পচনশীল অবস্থায় ছিল। একই বিছানায় মৃত অবস্থায় পড়েছিল তার স্ত্রী রত্না। সিআইডি ক্রাইম সিন মরদেহের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। পরে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
এসআই বলেন, ওই বাসায় স্বামী স্ত্রী দুজনই থাকতেন। কারো সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না তাদের। এক কাজের বুয়া ঠিকে কাজ করতো। তবে দুই মাস যাবত কাজের বুয়ার বেতন দিতে পারেনি তারা। রোজার ঈদের পরে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে বেতন নেওয়ার উদ্দেশ্যে কাজের বুয়া ওই বাসায় যায় এবং অনেকক্ষণ কলিংবেল টিপেও কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে চলে যায়। এরপর শনিবার বিকেলে বাড়িওয়ালার মাধ্যমে ওই বাসায় আবার যায়। তখন অনেকক্ষণ কলিং বেল বাজানোর পরেও সাড়া-শব্দ না পেয়ে পুলিশের খবর দেয়। খবর পেয়ে ওই বাসায় গিয়ে কেচিগেটের তালা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। পাশেই একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল, ‘বিয়ের পর আমার বাবা-মা-স্বামীর পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নাই। আমাদের দুজনের মরদেহ ঢাকাতে কোনো সরকারি কবরস্থানে দাফন দিয়েন। আমার এবং আমার স্বামীর বাড়িতে নেওয়ার দরকার নাই।’
এসআই আরও বলেন, স্বামী মুঈদ দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে ভুগতেছিলেন। তার স্ত্রী রত্না বাইরে কোথাও বের হইতেন না। ধারণা করা হচ্ছে, স্বামী চার-পাঁচ দিন আগে মারা গেছেন। এই শোকে স্ত্রী কোনো কিছু সেবন করে আত্মহত্যা করতে পারেন। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
এদিকে মৃত মুঈদের বড় ভাই ডা. মুগলী সানি বলেন, ‘গত ২১ সালের পর তাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ নাই। ঢাকার কোথায় থাকতো আমাদের জানা ছিল না। তার ভাইয়ের আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় পুলিশের মাধ্যমে তাদের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানতে পারি। তবে কিভাবে মারা গেছে তা আমাদের জানা নেই। তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার আড়াই কান্দি গ্রামে বাবার নাম মো. মুসা।’
মৃত রত্নার বাড়ি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায়। বাবার নাম জয়নাল আবেদিন।
সারাবাংলা/এসএসআর/এসডব্লিউ