ঢাবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:৪৮ | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৩
ঢাকা: রাজধানীর হাতিরপুলের একটি বাসা থেকে পিনাক রঞ্জন সরকার (২৪) নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। প্রেমে ব্যর্থতার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে।
কলাবাগান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, খবর পেয়ে সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে হাতিরপুল ফ্রী স্কুল স্ট্রিটের ৩৮৭/৫ নম্বর বাড়ির ৯ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসআই আরও জানান, দুই রুমের ফ্ল্যাটটিতে পিনাক এবং তার সহপাঠী জাহিদ হাসান থাকতেন। সন্ধ্যায় তার রুমমেট বাসায় ফিরে ফ্ল্যাটে ঢুকে পিনাক রঞ্জনের রুমটি ভিতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। পরবর্তীতে থানায় খবর দিলে ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে রুমের ভিতর ঢুকে দেখা যায়, ফ্যানের হুকের সঙ্গে গামছা পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছেন তিনি। তখন ঝুলন্ত অবস্থা থেকে তাকে নিচে নামান হয়। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এক সহপাঠীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত একমাস আগে তার সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটে। সেই কারণে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া তার রুম থেকে একটি ডাইরিতে ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ লেখা এমন একটি নোট পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তিনি ফেসবুকেও একই কথা লিখে পোস্ট করেছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিট থেকে ৭টা ২০ মিনিটের মধ্যে যেকোন সময় তিনি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। এরবাইরেও ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে তার সহপাঠী ও রুমমেট জাহিদ হাসান জানান, গতকাল সন্ধ্যায় তিনি অফিস থেকে বাসায় ফিরে পিনাকের রুমের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখতে পান। এরপর তিনি অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেন। কোন সারাশব্দ না পেয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদের এবং প্রক্টোরিয়াল টিমকে বিষয়টি জানান এবং ৯৯৯ এর মাধ্যমে থানায় খবর দেন।
জাহিদ আরও জানান, তাদেরই এক সহপাঠীর সঙ্গে পিনাকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাসখানেক আগে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপরে কয়েকদিন মন খারাপ করে থাকলেও বর্তমানে তাকে দেখে সবকিছু স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। হঠাৎ গতকালকে এই ঘটনা কি জন্য ঘটিয়েছে তা বলতে পারছি না।
মৃত পিনাকের বাড়ি ময়মনসিংহের সদর উপজেলায়। ঢাবির চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ন বিভাগ মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তিনি। পড়ালেখার পাশাপাশি একটি চিত্রাঙ্কন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শেখাতেন তিনি। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার সেখানে শিশু ছাড়াও বিভিন্ন বয়সি শিক্ষার্থীদের ক্লাশ করাতেন।
সারাবাংলা/এসএসআর/এমপি