Tuesday 22 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অপহরণের পর শিশুকে দিয়ে করানো হয় ভিক্ষা, শরীরজুড়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৬ | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৮

শিশুটির সারা শরীরে সিগারেট আর কয়েলের ছ্যাঁকা দেওয়া হতো।

পাবনা: ছয় মাস আগে অপহরণ করা হয় মাদরাসার শিক্ষার্থী ৬ বছরের শিশু সোয়াইব হোসেনকে। এরপর তার ওপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। সারা শরীরে সিগারেট আর কয়েলের ছ্যাঁকা দিয়ে, হাতের নখ উপড়ে ফেলে এবং না খাইয়ে রেখে বানানো হয় প্রায় প্রতিবন্ধী। রাতে এভাবেই চলে তার ওপর নির্যাতন। আর দিনে তাকে দিয়ে করানো হতো ভিক্ষা। অবশেষে শিশুটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকে (৩২)।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পাবনা সদর উপজেলার চক ছাতিয়ানী এলাকার আমিনুল ইসলাম ও সোহানা জাহানের সন্তান সোয়াইব। বাবা অন্যত্র বিয়ে করায় মায়ের কাছেই থাকত সে। গত বছরের ২ অক্টোবর একই উপজেলার শানির দিয়ার এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম বিপ্লব শিশুটিকে বিস্কুট কিনে দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

সন্তানের খোঁজ না পেয়ে ওই বছরের ৭ অক্টোবর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তার মা সোহানা জাহান। আত্মগোপনে থাকা অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লব শিশু সোয়াইবের মাকে ফোন করে অপহরণ করেছে বলে জানিয়েছিল।

ঘটনার ছয় মাস পর গত ১৮ এপ্রিল খুলনার রুপসা ফেরিঘাট এলাকা থেকে ভিক্ষা করানো অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকেও আটক করা হয়। এরপরই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর ও শিশুটির ওপর বর্বর নির্যাতনের তথ্য।

ভুক্তভোগী শিশু সোয়াইব জানায়, রাতে তাকে একটি কক্ষে বন্দি করে রাখতেন রফিকুল ইসলাম বিপ্লব। সহজে কিছু খেতে দিতেন না। তার শরীরে দাঁতের কামড় বসিয়ে চামড়া তুলে ফেলতো। সারা শরীরে দেওয়া হতো সিগারেট ও কয়েলের আগুনের ছ্যাঁকা। বাম হাতের একটি আঙুলের নখ প্লাস দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে। দিনের বেলায় বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে তাকে দিয়ে ভিক্ষা করাতেন বিপ্লব।

সোয়াইবের মা সোহানা জাহান বলেন, ‘পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে সেদিন বিপ্লব আমার কাছ থেকে ছেলেটাকে নিয়ে যায় বিস্কুট কিনে দেবে বলে। তারপর থেকে ছেলেকে আর খুঁজে পাইনি। পরে সে ফোন করে জানিয়েছিল যে আমার ছেলেকে অপহরণ করেছে। তারপর থেকে তার ফোনও বন্ধ। এরপর সদর থানায় গিয়ে ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ করি।

বিজ্ঞাপন

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. মো. রফিকুল হাসান জানান, নির্যাতনের ফলে তার শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। হাতের একটা আঙুল আজ অপারেশনের মাধ্যমে কেটে ফেলতে হবে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিচ্ছি। ঠিকমতো চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে আশা করছি দুই মাসের মধ্যে শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে।

পাবনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল সালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন বলেন, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম বিপ্লবকে আটক করা হয়েছে। ১৯ এপ্রিল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর শিশু সোয়াইব হোসাইন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ভর্তি করা হয়েছে।

সারাবাংলা/এইচআই

অপহরণ ভিক্ষা শরীরজুড়ে সিগারেটের ছ্যাঁক শিশু নির্যাতন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর