‘মামলা-জুলুমের প্রতিশোধ নেওয়া হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে’
২৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৪৪ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:১১
রংপুর: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ১/১১ পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা-জুলুম হয়েছে। এর প্রতিশোধ নেওয়া হবে ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে। তাই রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছাতে হবে। এজন্য দায়িত্ব নিতে হবে জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রংপুর, নীলফামারী ও সৈয়দপুরে আয়োজিত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃত্তি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণ যাতে আগামী দিনে বিএনপির ওপর আস্থা রাখতে পারে, সেজন্য জনগণের আস্থা ধরে রাখতে বিএনপির প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। কেননা আমরা দেশের ২০ কোটি মানুষের সঙ্গে কমিটমেন্ট করেছি। দেশের মানুষের কাছে নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ৩১ দফার কর্মশালার আলোচনা পৌঁছে দেবেন।’
এক পর্যায়ে তারেক রহমান নেতাকর্মীদের জিজ্ঞেস করেন তারা তার এই কথার সঙ্গে একমত কি না এবং সবাইকে হাত তুলে সম্মতি জানাতে বলেন। সকলে সমর্থন জানালে তারেক রহমান সকলকে শপথ নিতে বলেন যে, ‘আগামী নির্বাচন পর্যন্ত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা এক কাতারে কাজ করব। জনগণ আমাদের নির্বাচিত করলে, আমরা জনগণের উন্নয়নে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’
এর আগে তিনি ভার্চুয়ালি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের প্রশ্ন ও প্রস্তাবনা শুনে উত্তর দেন। এ সময় তারেক রহমান কৃষকদের ভাগ্য উন্নয়নের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরেন।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা দেওয়া হবে জানিয়ে তারেক রহমান অন্যান্য খাতের উন্নয়নের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় তিন কোটি লোক বেকার। তাই কারিগরি শিক্ষা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি— এই তিনটি খাতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষিত বেকারদের জন্য ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেবে। এছাড়া, কৃষিকে আধুনিকায়ন এবং কৃষকদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে। উদ্যোক্তা তৈরির জন্য বিএনপি যুবকদের পাশে থাকবে এবং উদ্যোক্তাদের পণ্য বিদেশে রফতানি করা হবে। ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা যেমন মিটবে, তেমনি আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশ সুনাম অর্জন করবে।’
অদৃশ্য প্রতিপক্ষ ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে, তারাই বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে দাবি করে তারেক রহমান সম্মিলিতভাবে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে দুপুরে রংপুর শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত বিএনপির ৩১ দফা বিষয়ক কর্মশালায় বক্তৃতা করেন বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।
অনুষ্ঠানে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বিএনপি ১৭ বছর ধরে অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের জন্য লড়াই করে আসছে। এখনো সেই লড়াই চলছে। কেননা বর্তমানে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। আছে অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত আমাদের এ লড়াই চলবে।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালয় সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘দেশনায়ক তারেক রহমান তৃণমূল থেকে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করেছে। আগামী বাংলাদেশ হবে দেশনায়ক তারেক রহমানের বাংলাদেশ। ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। জেলখানায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/পিটিএম