ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ময়না এ সি বোস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমান অরুনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় তার পদত্যাগের দাবিতে স্কুলের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীরা জেলার বোয়ালমারী-মাগুরার মোহাম্মদপুর সড়কের স্কুলের সামনে গাছের গুড়ি ফেলে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ ও স্কুলের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খবর পেয়ে দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেল ও থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের দাবি ও অভিযোগ শুনে সমাধানের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যান।
প্রধান শিক্ষক মোকলেচর রহমান অরুনের বিরুদ্ধে সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃধা আবুল হাশেম সিদ্দিকী, সিনিয়র শিক্ষক মোহাম্মদ শাহাদত হুসাইন, শিক্ষক রোকশানাসহ ১৩ জন শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রধান শিক্ষক মোকলেচর রহমান অরুনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত ও অনিয়মসহ ৩১টি অভিযোগ এনে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতির নিকট একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তারপর থেকেই প্রধান শিক্ষক শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালান।
স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজীবসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমান ঠিকমত স্কুলে আসেন না, স্কুল চত্বরের লাখ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করে খেয়েছে, স্কুলের পুরাতন ভবন বিক্রি করে খেয়েছে, স্কুলের আয় ব্যয়ের কোনো হিসাব নেই।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, পুরাতন ভবন বিক্রি করার কারণে সাইন্সের ল্যাবের ক্লাস স্কুল মাঠে রোদের মধ্যে করতে হয়। যার কারণে আমরা সকল শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ চাই। প্রধান শিক্ষক যোগদান করার পর থেকে স্কুলে এক টাকারও উন্নয়ন কাজ হয়নি। যত ধরনের টাকা পয়সা ফাণ্ডে ছিল সবকিছু তিনি মেরে খেয়ে ফেলেছেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমান অরুন স্কুলে না থাকায় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও স্যারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি (প্রধান শিক্ষক) নিয়মবহির্ভূত কোনো কাজ করে থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রাব্বানী সোহেলকে পাঠিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করে ক্লাসে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সকল অভিযোগ শোনা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এসব অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।